প্রসূন বিশ্বাস: পরপর দু'বার চ্যাম্পিয়ন! তাও আবার কলকাতার মাটিতে দু'টো কলকাতার দলকে হারিয়ে। চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়ার পর যখন চ্যাম্পিয়ন লেখা কালো টিশার্ট পরে গোটা নর্থইস্ট টিম উল্লাসে মেতে উঠেছে, তখন দলের কর্ণধার বলিউড তারকা জন আব্রাহাম যেন নির্লিপ্ত। গ্যালারির দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন। সেই গ্যালারিগুলোতেই ঝুলছিল বিশাল বিশাল বাঘের ছবি দেওয়া ডায়মন্ড হারবার এফসির টিফো। পাশে দাঁড়িয়ে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের সিইও মান্দার তামানে।
এর মাঝে মান্দারের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকেই জন এগিয়ে গেলেন কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আলাদিন আজেরাইয়ের দিকে। কথা বলার অবকাশ না দিয়েই জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। এর মধ্যেই দলের অন্যরা এসে ঘিরে ধরলেন চ্যাম্পিয়ন দলের কর্ণধারকে। অন্যদের সঙ্গে একের পর এক সেলফির আবদারে এতটুকু বিরক্ত প্রকাশ করলেন না। পরপর দু'বার চ্যাম্পিয়ন শুধু নয়, এবার যেন দ্বিগুণ প্রাপ্তি আজেরাইয়ের। শুধু টুর্নামেন্টের সেরা হওয়াই নয়, সর্বোচ্চ গোলদাতার মালিকও তিনি।
দুই পুরস্কার নিয়ে এই মরোক্কান স্ট্রাইকার বলছিলেন, “এই মুহূর্তটার জন্য আমরা খুব পরিশ্রম করেছি। এই ফাইনালটাও আমাদের কাছে সহজ ছিল না। আশা করি আগামীতেও এই ফল ধরে রাখার চেষ্টা করব। আমার এই জোড়া পুরস্কারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।” কলকাতায় খেলতে পছন্দ করা এই মরোক্কান ফুটবলারটি প্রতিযোগিতার সেরার পুরস্কারটা মেয়ে সোফিয়াকে উৎসর্গ করলেন তিনি। প্রতিপক্ষ কোচ কিবু ভিকুনাও বলছেন ব্যবধান গড়ে দিলেন আলাদিনই। ৬-১ গোলে জিতেও ডায়মন্ড হারবারের প্রশংসা শোনা গেল নর্থইস্ট কোচ পেদ্রো বেনালির গলায়। তিনি বলছিলেন, “৬-১ গোলে জয়টা বড় কথা নয়। জয় এসেছে এটাই বড় দিক। তবে ডায়মন্ড হারবার খুবই ভালো দল। সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছে। আশা করব ওরা আইএসএলেও উঠে আসবে।”
জন আব্রাহামের প্রশংসা শোনা গেল বেনালির গলাতেও। তবে আজেরাইকে এখনই সেরা বলতে নারাজ বেনালি, তিনি বলেন, এখনই ওকে ভারত সেরা বলব না। ও আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আমি জানি আলাদিন দু-তিনজন ডিফেন্ডারকে ব্যস্ত রাখতে পারে। সেই সুযোগে অন্যরা গোল করার জায়গা পেয়ে যায়। তবে আমার দলে বাকি যে চব্বিশ জন ফুটবলার রয়েছে, তারাও সেরা।” এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করার মাঝেই নর্থইস্টের ফুটবলাররা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে জল দিয়ে কোচকে ভিজিয়ে দিয়ে যান। রাতে হোটেলে দ্বিতীয়বার ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সেলিব্রেশন চলে নর্থইস্টের ফুটবলারদের।
