মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: যোগ্য দলের জয়। অনেকে সেনেগালের লড়াইকে বাহবা দেবেন। আমিও দিচ্ছি না তা নয়। নেদারল্যান্ডস (Netherlands) ২-০ গোলে জিতল তারজন্য তাদের প্রশংসা করতেই হবে। অভিজ্ঞতার কাছে মার খেয়ে গেল আফ্রিকান কাপ অফ নেশনস জয়ী দল। ডিফেন্সে ভার্জিল ভ্যান ডাইক, মাঝমাঠে ফ্রেঙ্কি ডে জং–রা দীর্ঘদিন বড় ক্লাবে খেলছে। তাই জানে কখন কীভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে হয়। সাদিও মানে দলে থাকলে সেনেগালের লড়াইটা নিঃসন্দেহে জমতো। এই ছেলেটা যেমন গোল করে, গোল করায়ও। মানের অনুপস্থিতি স্পষ্ট হয়ে উঠল সেনেগালের (Senegal) খেলায়।
আর একটা কারণে মার খেল আফ্রিকার দলটা। সেটা হল প্রতিপক্ষকে অযথা অফসাইডের ফঁাদে ফেলার প্রচেষ্টা। কোডি গাকপো গোল করার সময় তাকে কেউ দেখল না। আসলে সেনেগালের ডিফেন্ডাররা ভেবেছিল, অফসাইডের ফাঁদে ফেলে গোল করা রুখবে। ঘটল ঠিক উল্টো। ডে জংয়ের পাশ থেকে গাকপো সময়ের সঙ্গে তাল রেখে হেডে গোল করল। সময়ের মেলবন্ধন ঘটাতে পারল না সেনেগালের গোলকিপার এডুয়ার্ড মেন্ডিও।
[আরও পড়ুন: ‘লিও, দিয়েগোর জন্য এবার বিশ্বকাপ জেতো’, মেসির কাছে অনুরোধ বুরুচাগার]
এই প্রথম। নাহলে মেন্ডি বেশ কয়েকবার অসাধারণ সব সেভ করেছে। আইন্দোভানে খেলা গাকপোর প্রশংসা করতেই হবে। ডে জংয়ের থ্রু বল দেখেই এগিয়ে গিয়েছে। ডেভি ক্লাসেনের দ্বিতীয় গোলকে গুরুত্ব দেব না। তখন সেনেগাল গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তাই তারা রক্ষণে সেভাবে নজর দেয়নি। দু’টি দলের কাছেই ম্যাচটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ন।
এই গ্রুপের বাকি দু’টি দল কাতার ও ইকুয়েডরকে নিয়ে কেউ বেশি আশাবাদী নয়। তাই শুরু থেকে কেউ খোলস ছাড়েনি। বিরতির পর সেনেগাল বেশি আক্রমণের দিকে নজর দেয়। সেই সময় তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ডাচ গোলকিপার আন্দ্রিস নোপার্ট। এই প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে। কে বলবে নবাগত। নেদারল্যান্ডসের কোচ লুই ফান গলের দূরদৃষ্টি কতটা এই ঘটনাই প্রমাণ করে।
কিন্তু সেনেগালের কোচ আলিউ সিসের দাবার চাল ভুল প্রমাণিত হয়ে গেল ওই একটা জায়গায়, অফসাইডের ফাঁদে ফেলার প্রচেষ্টা। ডাচরা লড়াই করে ম্যাচ জিতল। এই প্রথম কাতার বিশ্বকাপে জমজমাট ম্যাচের সাক্ষী থাকলাম। তবু ডাচদের নিয়ে খুব একটা আশাবাদী আমি নই। গ্রুপ লিগে হয়তো শীর্ষ স্থান দখল করবে। পরবর্তীকালে দেখা যাবে এমন একটা ম্যাচ হেরে বসেছে যা কেউ কল্পনা করেনি। প্রকৃত চোকার্স বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই। নাহলে তিন-তিনবার ফাইনালে খেলে একবারও কিনা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না।
মেম্ফিস ডিপে চোটের জন্য এই ম্যাচে অনিশ্চিত ছিলেন। প্রত্যাশিতভাবেই দলের সেরা স্ট্রাইকারকে নিয়ে বাড়তি ঝুঁকি নিলেন না কোচ ফান গল। প্রথম দলে রাখেননি। তবে পরে নামিয়ে দেখে নিলেন তাঁর ঘোড়া কতটা ফিট। মেম্ফিস নামতেই সেনেগালের ডিফেন্স কিছুটা হলেও চাপে পড়ে গিয়েছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাতার অভিযান ভালমতো শুরু করতে পারল নেদারল্যান্ডস। এখন দেখার বাকি দিনগুলোতে কেমন ভাবে তারা এগোতে পারে।