সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক; দুঃসময় যেমন মানুষকে সময় সময় ভেতর থেকে গুঁড়িয়ে দেয়, তেমন কখনও কখনও আবার তাতিয়েও দেয়। নতুন স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করে। এবং ভারতের সিনিয়র ওপেনার শিখর ধাওয়ানের (Shikhar Dhawan) ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টা হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) কাছে প্রথম ওয়ান ডে হারের আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে ফের নামতে হচ্ছে ভারতকে (India)। আজ, শুক্রবার। এবং দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে হেরে গেলে টেস্টের মতো ওয়ান ডে সিরিজ জয়ের স্বপ্নও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেলে রেখে আসতে হবে ভারতকে।
[আরও পড়ুন: টি-২০ বিশ্বকাপে ফের ভারত-পাক মহারণ, পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষণা করল আইসিসি]
বুধবার প্রথম ওয়ান ডে হারের পর কেএল রাহুলের ভারতকে নিয়ে প্রশ্ন এক নয়, একাধিক। টিমের বোলাররা ব্যর্থ। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং আর যা-ই হোক, অমিত শক্তিশালী কিছুতেই বলা যাবে না। একটা এডেন মার্করাম। একটা কুইন্টন ডি’কক। একটা তেম্বা বাভুমা। একটা ভ্যান ডার ডুসেন। কিন্তু তাতেই গলদঘর্ম হয়ে গিয়েছে ভারতীয় বোলিংয়ের। সমলাচোনার মুখে পড়েছে ভারতের অস্থায়ী অধিনায়ক কেএল রাহুলের ক্যাপ্টেন্সিও। ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে ছ’নম্বর বোলার হিসেবে খেলালেও তাঁকে দিয়ে এক ওভারও বোলিং করাননি। আবার সূর্যকুমার যাদবকেও খেলাননি। ব্যাটিংয়েও প্রবল ভুগিয়েছে মিডল অর্ডার। বিরাট কোহলি এবং শিখর ধাওয়ান আউট হয়ে যাওয়ার পর একজনও পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকা বোলারদের পাল্টা দিতে। আর দেখতে গেলে, এত চাপ চাপ হতাশার মধ্যে ভারতীয় ছাউনিতে আশার আলো একজনই। শিখর ধাওয়ান স্বয়ং!
দীর্ঘদিন পর ভারতীয় ওয়ান ডে টিমে এবার ফিরেছেন যিনি। আর প্রত্যাবর্তনেই ঝকঝকে ৭৯ করে গিয়েছেন। অথচ গত কয়েক মাসে কম বলা হয়নি শিখরকে নিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘গব্বর’-এর বয়স নিয়ে বলা হয়েছে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তাঁকে খেলানো হয়নি। আইসিসি টুর্নামেন্টে ঈর্ষণীয় রেকর্ড থাকা সত্বেও। কিন্তু শিখর বলে দিচ্ছেন, জীবনের এই কঠিন সময়ই তাঁকে আরও পোক্ত হতে শিখিয়েছে।
“একটা ভাল ব্যাপার যে আমি খবরের কাগজ পড়ি না। টিভি দেখি না। তাই আমাকে নিয়ে নেগেটিভ খবরাখবর কানে আসে না,” পার্লে প্রথম ওয়ান ডে শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দিয়েছেন শিখর। বরং বাঁ হাতি ভারতীয় ওপেনার বলে দিচ্ছেন যে, দুঃসময় তাঁর জীবনে এই প্রথম এল না। আর এটাই শেষ নয়। কিন্তু দুঃসময় থেকে একটা শিক্ষা পেয়েছেন তিনি। নিজের উপর বিশ্বাস না হারানোর শিক্ষা।
“নিজের খেলার উপর বিশ্বাস রেখেছি আমি। আর খারাপ সময় আমার জীবনে এই প্রথম এল না। আগেও এসেছে। আর পরেও আসবে। সবার জীবনেই উত্থান-পতন থাকে। কিন্তু কী জানেন, দুঃসময় আমাকে আরও শক্তিশালী করে,” বলতে থাকেন শিখর। গত বিজয় হাজারে ট্রফি একেবারে ভাল যায়নি ধাওয়ানের। পাঁচটা ইনিংস খেলে একবারও কুড়ি পেরোননি তিনি। কিন্তু তাঁর কেরিয়ার গ্রাফে একটা অদ্ভুত ব্যাপারও আছে। যখনই তাঁকে চিরতরে ছেঁটে ফেলা হয়, তখনই তিনি রান করে আবার ফিরে আসেন। এবারও যেমন হল।
“এ সব বাদ পড়ার খবরাখবর আমার কানেও আসে। কিন্তু আমি সব সময় নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছি। সব সময় দেখেছি, আমার খেলাটা যাতে ঠিক থাকে।
বাকি ঈশ্বরের হাতে,” বলে দিয়েছেন ধাওয়ান। “আমি বিশ্বাস করি, আমার যা অভিজ্ঞতা, তাতে আমি রান করে দেব। করেছিও। আশাও করছি, খেলব যত দিন রান করে যাব। তবে হ্যাঁ, প্রথম ওয়ান ডে-তে রোহিতের অভাব আমরা ভাল রকম টের পেয়েছি। ও ফিরে এলে টিম অনেক বেশি শক্তিশালী হবে,” বলে দেন শিখর।
মুশকিল হল, পার্লে দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তেও রোহিতকে ছাড়াই নামতে হবে ভারতকে। আর টিমের ব্যাটিংয়ের দশা যা, তাতে এত দিনের ব্রাত্য শিখরই ভরসা।