সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গায়ে আকাশি রঙের শার্ট। মুখে আশ্চর্য নির্লিপ্তি। হাতে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক। আর সেই আগ্নেয়াস্ত্র থেকে উল্টোদিকে থাকা রামাধীর সিং (তিগমাংশু ধুলিয়া)-এর শরীরে একের পর এক বুলেট বিঁধে দিচ্ছেন ফয়জল খাল (নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি)! এটাই ছিল অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর-২’ছবির শেষ দৃশ্য। ঠিক সেই রকমই দৃশ্য বুধবার দেখা গিয়েছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তারা যে সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, স্কুল শিক্ষক রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ারও পরেও থামেনি আততায়ীরা। উন্মত্তের মতো তখনও তাঁর মাথায় একের পর এক গুলি চালিয়ে গিয়েছে তারা।
গত বুধবার রাতে দুই সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে বেরিয়ে খুন হন আলিগড়ের (Aligarh Murder) এবিকে হাইস্কুলের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক দানিশ আলি। একটি স্কুটারে চেপে এসে তাঁকে প্রথমে হুমকি দেয় দুই বন্দুকধারী। তার পরেই শিক্ষককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। প্রকাশ্যে আসা সিসি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, প্রথম গুলি লাগার পরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শিক্ষক। এর পরেই এক আততায়ী স্কুটার থেকে নেমে দানিশের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে পর পর গুলি করতে থাকেন। সব মিলিয়ে ছ'রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দানিশকে গুলি করার সময় আততায়ীরা বলেছিলেন, "এ বার চিনবি আমি কে!"
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, পুরনো শত্রুতার কারণেই দানিশকে খুন করা হয়েছে। সেই দিকটি নজরে রেখেই তদন্ত চালানো হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে দানিশের সহকর্মী এবং পরিবারের লোকেদের। ঘটনার পর থেকেই পলাতক আততায়ীরা। তাদের খোঁজেও নানা জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় আবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে যোগী আদিত্যনাথের আমলে উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা। ঘটনাচক্রে, এই হত্যাকাণ্ডের (Aligarh Murder) ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড়াই করতে দেখা গিয়েছিল যোগী আদিত্যনাথকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “প্রত্যেক মানুষেরই নিরাপত্তা জরুরি। আজ উত্তরপ্রদেশে ব্যবসায়ীরা লগ্নি করছেন, কারণ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।”
