বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: উত্তর সিকিমের চাটেনের সেনা ছাউনিতে বিধ্বংসী ভূমিধসের আটদিন পর উদ্ধার হল এক জওয়ানের দেহ। আজ, সোমবার সেই মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে এখনও পাঁচজন জওয়ান নিখোঁজ রয়েছেন। মঙ্গন জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সেনার নাম সাইনুদ্দিন পিকে। বাকিদের খোঁজে এনডিআরএফ ও ভারতীয় সেনাবাহিনী জোর তল্লাশি চালাচ্ছে। গত ১ জুন ভূমিধসের পর উদ্ধার হয়েছিল হাবিলদার লখিন্দর সিং, ল্যান্স নায়েক মুনিশ ঠাকুর এবং পোর্টার অভিষেক লাখার দেহ। এখনও নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রীতপল সাধু, তাঁর স্ত্রী বায়ু সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়াড্রন লিডার আরতি বি সাধু, কন্যা আমাইরা সাধু, সুবেদার ধরমবীর এবং সুনীলাল মোচারি।
মঙ্গন জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ জুন প্রবল বর্ষণের জেরে হড়পা বান ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয় উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। রাস্তা ও সেতু, কিছুই তেমন আর অবশিষ্ট নেই। এই মুহূর্তে বিপর্যস্ত লাচেন। প্রচুর পর্যটকও আটকে ছিলেন সেখানে। সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে পৌঁছে পর্যটকদের দীর্ঘ চেষ্টার পর উদ্ধার করেছিলেন। পর্যটকদের চাটেনে নামিয়ে আনা হয়। এরপর উদ্ধার অভিযানে নামে ভারতীয় বায়ু সেনাবাহিনী ও এনডিআরএফ। প্রায় দু'হাজার পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়। হেলিকপ্টারে পকিয়ং গ্রিন ফিল্ড বিমানবন্দরে উড়িয়ে আনা হয় গাড়ি চালকদেরও।
লাচেন থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে চাটেনে সবচেয়ে বড় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। সেখানে কয়েকটি সেনা ছাউনির মধ্যে একটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিন সেনা জওয়ানের দেহ ঘটনার পর উদ্ধার হয়। হড়পা বানের জলের তোড়ে ভেসে নিখোঁজ হন ছয়জন। সোমবার তাঁদেরই একজনকে উদ্ধার করে এনডিআরএফ ও ভারতীয় সেনাবাহিনী। এদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টাও চলছে। মঙ্গন থেকে গাংটক হয়ে ফোডং রাস্তা চালু হয়েছে। হালকা যানবাহন এই রাস্তায় চলাচল করতে পারবে। মঙ্গন-চুংথাং হয়ে টুং নাগা নতুন রাস্তা অবরুদ্ধ রয়েছে। মঙ্গন থেকে চুংথাং হয়ে সঙ্কলং রাস্তা এখনও বন্ধ আছে। মুন্সিথাং এলাকা থেকে চুংথাং থেকে লাচেন এবং লাচেন টু থাঙ্গু- জিমায় অবরুদ্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি কত দিনে স্বাভাবিক হবে? সেই প্রশ্ন উঠেছে। সামনেই বর্ষা। তখন কী পরিস্থিতি কী হবে? সেই চর্চাও চলছে।
