সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন যত যাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের মতে ততই বাড়ছে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা। নিঃশব্দ অতিমারির চিকিৎসায় বিপুল টাকা খরচ হয়। ওষুধ কিনতে গিয়েও বিপাকে পড়েন রোগীর পরিবারের লোকজন। ওষুধ কিনতে গিয়ে মধ্যবিত্ত কার্যত সর্বস্বান্ত হয়ে যান। তবে তা সত্ত্বেও বহুক্ষেত্রে প্রিয়জনকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। শনিবারের বাজেটে যেন ক্যানসারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করল কেন্দ্র সরকার। ক্যানসার-সহ একাধিক মারণরোগের ৩৬টি জীবনদায়ী ওষুধে ১০০ শতাংশ কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
এছাড়া বাজেটে ৬টি জীবনদায়ী ওষুধে ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। বলে রাখা ভালো, গত বছরের শেষদিকে চোখের ছানি, অ্যাজমা, যক্ষা, থ্যালাসেমিয়া-সহ আরও একাধিক ওষুধের দাম একধাক্কায় অনেকখানি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয় ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (NPPA)। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির চাপের মুখে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলেই জানানো হয়। স্বাভাবিকভাবে এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ে আমজনতা। তবে এদিনের বাজেটে (Budget 2025) ওষুধে ১০০ শতাংশ কর ছাড়ে কমবে ওষুধের দাম। সুতরাং রোগীস্বার্থে এই ঘোষণা যে নিঃসন্দেহে অনেক বড় সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা ICMR-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৪.২ শতাংশ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মহিলারা। তাঁরা মূলত সার্ভাইক্যাল ক্যানসারে আক্রান্ত হন। আর বাকিরা ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত। কয়েক লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান এই রোগে। এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সে কারণে দেশের প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ক্যানসার সেন্টার তৈরির কথা ঘোষণা করেন নির্মলা সীতারমণ। এই উদ্যোগের ফলে আগামী ৩ বছরে অন্তত ২ হাজার ক্যানসার সেন্টার তৈরি হবে দেশে।
উন্নত যন্ত্রপাতি এবং ওষুধপত্রের মাধ্যমে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রের মোদি সরকার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তারই প্রতিফলন ঘটল এদিনের বাজেটে। নির্মলা সীতারমণ এদিন বাজেটে 'চিকিৎসা পর্যটনে'র উপর জোর দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। সেক্ষেত্রে পিপিপি মডেলে কাজ হবে বলেই জানান। এছাড়া, বারবার অভিযোগ ওঠে দেশের সরকারি হাসপাতালে রোগী এবং চিকিৎসকের সংখ্যার অনুপাত অনেক কম। তাই চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত নজর দেওয়া প্রয়োজন। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আগামী পাঁচ বছরে ৭৫ হাজার আসন বৃদ্ধির ঘোষণাও করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। গবেষণাক্ষেত্রে উন্নতিতেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
