সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়ে দেরাদুনে মৃত্যু হয়েছে ত্রিপুরায় পড়ুয়া অ্যাঞ্জেল চাকমার। গণপিটুনির পাশাপাশি তাঁকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ‘আমিও ভারতীয়’, হামলাকারীদের উদ্দেশে বলেছিলেন মৃত পড়ুয়া। এবার একই কথা বললেন পুত্রশোকে বিহ্বল অ্যাঞ্জেলের বাবা তরুণ প্রসাদ চাকমা। তিনি বলেন, "উত্তর-পূর্বের বাসিন্দারাও ভারতীয়, তাদের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।"
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পড়াশোনা কিংবা কাজের সূত্রে উত্তর-পূর্বের যুবারা ছড়িয়ে রয়েছে। তাদের সুরক্ষার দাবি জানান তরুণ চাকমা। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য তিনি। এদিন তরুণ বলেন, "আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছেলেমেয়েরা দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে বা পড়াশোনা করতে যায়। তাদের এতখানি খারাপ আচরণ প্রাপ্য নয়। আমরাও ভারতীয়। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, সকলের সঙ্গে সমান আচরণ নিশ্চিত করুন।"
একজন ভারতীয় সেনা জওয়ানের সন্তানের সঙ্গে ভয়ংকর ঘটনায় হতবাক গোটা দেশ। তবু তরুণ প্রসাদ চাকমা বলছেন, "আমি চাই না আমার সন্তানের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অন্য কারও সঙ্গে ঘটুক।" ত্রিপুরায় পড়ুয়ার মর্মান্তিক হত্যার ঘটনায় সরব হয়েছেন নাগাল্যান্ডের মন্ত্রী তেমজেন ইমনা। তিনি বলেছেন, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা মোমো নই।
ত্রিপুরার বাসিন্দা বছর চব্বিশের অ্যাঞ্জেল দেরাদুনের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন। জানা গিয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বর তিনি ও তাঁর দাদা মাইকেল চাকমা কিছু সামগ্রী কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে কয়েকজন মদ্যপ যুবক তাঁদের বর্ণবিদ্বষী মন্তব্য করতে থাকেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা তাঁকে, চিনা নাগরিক বলে দাগিয়ে দেন। প্রতিবাদ করতেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন অ্যাঞ্জেল। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে চাকমা ভাইদের উপর আচমকা হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি লোহার রড দিয়েও তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অ্যাঞ্জেল। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে হামলাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি চিনা নই, ভারতের নাগরিক।”
