সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু বছর ধরে লড়ে যাচ্ছি কিন্তু বিচার পাচ্ছি না। বিচার ব্যবস্থার প্রতি ক্রমেই আস্থা হারাচ্ছি। আমাদের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিগত কয়েকবছর ধরে আমরা সমাজে হেনস্তার শিকার হচ্ছি। উন্নাও কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের জামিন খারিজ হতেই মুখ খুললেন তার মেয়ে ঈশিতা সেঙ্গার।
দোষী সাব্যস্ত হওয়া কুলদীপের সাজা স্থগিত করে সম্প্রতি তাঁকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাই কোর্ট। সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল সিবিআই। সোমবার সেই মামলায় দিল্লি হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না কুলদীপ। পাশাপাশি, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এরপরই কুলদীপের মেয়ে ঈশিতা হতাশ হয়ে পড়েন। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডলে একটি খোলা চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, তাঁদের মর্যাদা, শান্তি, মৌলিক অধিকার সবকিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সমাজে প্রতিনিয়ত তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। ঈশিতা লেখেন, ‘এদেশে ন্যায়বিচার কোলাহল, হ্যাশট্যাগ কিংবা জনরোষের উপর নির্ভর করে না। সমাজমাধ্যমে আমাকে অসংখ্যবার ধর্ষণ-খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। কেবল অস্তিত্বের জন্য আমার শাস্তি পাওয়া উচিত বলা হয়েছে। এই ঘৃণা সহ্যাতীত। অবিরাম এই ঘটনা চলতে থাকে।’ তাঁর অভিযোগ, নিত্যদিন তাঁর পরিবারকে নির্যাতন, উপহাস করা হচ্ছে। তিনি লেখেন, ‘আমরা আর্থিক, মানসিক এবং শারীরিক সবরকমভাবে বিধ্বস্ত। কেউ আমাদের কথা শোনেননি। আমাদের সত্য অসুবিধাজনক ছিল বলেই কেউ আমাদের বিশ্বাস করেনি।’ তাঁর কথায়, “গত আট বছর ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছি। হয়তো আমার এবং আমার পরিবারের দুঃখের কোনও মূল্য নেই। দিন দিন আস্থা হারাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, উন্নাওয়ে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়ার পরেও দিল্লি হাই কোর্ট সম্প্রতি কুলদীপের সাজা স্থগিত রেখে তাঁকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে ক্ষোভ ছড়ায়। নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। বুধবার সন্ধ্যায় দশ জনপথে গিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের লোকজন বড় কোনও আইনজীবীর সাহায্য চেয়েছিলেন। এর পর সিবিআই-ই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপেই স্বস্তির বদলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের নির্যাতিতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, “এতদিন সিবিআই কী করছিল? সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার দোষী কুলদীপ সেঙ্গারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছিলেন। আমাদের সুপ্রিম কোর্টে আরও সতর্ক থাকতে হবে।”
