সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের জেরে ইতিমধ্যেই ঘুম ছুটেছে পাকিস্তানের। এই অবস্থার মাঝেই চন্দ্রভাগা নদীর উপর নয়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের জন্য অনেকটা গোদের উপর বিষফোঁড়া। দিল্লির তরফে জানা যাচ্ছে, কিস্তয়াড়ার চন্দ্রভাগার উপর যে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা হল দুলহস্তী স্টেজ-২ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। নয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত হবে ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনে বিশেষজ্ঞ মূল্যায়ন কমিটি (ESC) চলতি মাসের শুরুতে দুলহস্তী স্টেজ-২ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৩,২০০ কোটি টাকা। পরিবেশ মন্ত্রকের অনুমোদনের জেরে নির্মাণ সংক্রান্ত দরপত্র শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। দরপত্র প্রকাশের মাধ্যমে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের বরাত দেওয়া হবে কোনও সংস্থাকে। জানা যাচ্ছে, এই প্রকল্পের অনুমোদনের আগে কেন্দ্রীয় প্যানেলের বৈঠকে সিন্ধু চুক্তির প্রসঙ্গও উঠে আসে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চন্দ্রভাগার জল ভাগ হওয়ার এই চুক্তি পহেলগাঁও হামলার পর থেকে স্থগিত করেছে সরকার। চুক্তি স্থগিত থাকলেও প্যানেলের দাবি, অতীতের চুক্তি অনুযায়ীই এই নয়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কিস্তওয়াড়ায় ২০০৭ সাল থেকে সক্রিয় রয়েছে দুলহস্তী স্টেজ-১ প্রকল্প। যার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৯০ মেগাওয়াট। চন্দ্রভাগা নদীর উপর সেই প্রকল্পকেই সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্টেজ ওয়ানের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে একটি পৃথক নালার মাধ্যমে জল যাবে স্টেজ-২ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ৩,৬৮৫ মিটার লম্বা ও ৮ মিটার চওড়া এই নালার জন্য প্রয়োজন হবে ৬০.৩ হেক্টর জমি। এই জমির জন্য কিস্তওয়াড়ায় দুটি গ্রাম থেকে ৮.২৭ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে সরকারকে। সে প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে নেহরু আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি করেছিল ভারত। এই চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু ও তাঁর উপনদীগুলির জল ভারতের প্রাপ্য। এগুলি হল শতদ্রু, বিপাশা এবং ইরাবতী। অন্যদিকে পশ্চিমমুখী সিন্ধু, চন্দ্রভাগা এবং বিতস্তার জলে অধিকার থাকবে পাকিস্তানেরও। তবে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর সেই চুক্তি স্থগিত করে দেয় মোদি সরকার। যা রাজনৈতিক হুমকির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ করেছে পাকিস্তান।
