সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনের টিকিটের দাম এবং শ্রমিকদের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়ছে কেন্দ্র। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য যে বিশেষ ট্রেনগুলির ব্যাবস্থা হয়েছে তার ভাড়া কেন্দ্র বা রেল কেউই দেবে না। শ্রমিকদের কাছ থেকেই তা তুলতে হবে। এবং এই টাকা তুলে রেলের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্বও রাজ্য সরকারগুলিই। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে চরম ক্ষুব্ধ বিরোধী শিবির। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিচ্ছেন তাঁরা।
লকডাউনের জেরে ভিনরাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া, পর্যটক এবং চিকিৎসাপ্রার্থীদের জন্য পরিত্রাতা হয়ে এসেছে এই বিশেষ ট্রেন। যারা দিনের পর দিন কাজ খুইয়ে ভিনরাজ্যে আটকে আছেন তাঁরা বাড়ি ফেরার স্বপ্নও দেখছেন। এতদূর অবধি সব ঠিক ছিল। এরপরই হল ছন্দপতন। বিরোধীদের দাবি, রেলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য জন্য যে ট্রেন কেন্দ্র চালাচ্ছে, তা বিনামূল্যে নয়। বরং টিকিট কাটতে হবে শ্রমিকদের। যারা দিনের পর দিন অর্থাভাবে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের কাছ থেকে উশুল করা হবে ভাড়ার টাকা। আর সেই টাকা তোলার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। যদি রাজ্য সরকার চায় শ্রমিকদের থেকে টাকা না নিয়ে, নিজেরা ভাড়া মিটিয়ে দিতে পারবে। কিন্ত রেল টিকিট ছাড়া কোনও শ্রমিককে বাড়ি ফেরাবে না।
[আরও পড়ুন: শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনের খরচ দিতে হবে রাজ্যকেই, জেনে নিন কত ভাড়া]
এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে বিরোধী শিবির। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav) টুইট করে বলছেন, “যে শ্রমিকরা এতদিন বাদে বাড়ি ফিরছে তাঁদের কাছে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত লজ্জাজনক। আজ এটা পরিষ্কার ক্ষমতাসীন সরকার শুধু ধনীদের ঋণ মকুব করতে জানে। এবং গরিবদের বিরুদ্ধে কাজ করে। দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে যদি এভাবে টাকা নেওয়া হয়, তাহলে PM CARES-এ যে হাজার হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে তাঁর কাজ কী?” ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও (Hemant Soren) একই সুরে বিঁধেছেন কেন্দ্রকে। তিনি বলছেন, “আমাদের শ্রমিকদের কাছে এভাবে টাকা চাওয়া উচিৎ নয়। ওরা এমনিতেই অনেক কষ্টে আছে। কেন্দ্র যদি ওদের খরচ না দেয়, ঝাড়খণ্ড সরকার দেবে। কিন্তু ওদের কাছে আমরা টাকা চাইব না।” ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিকের প্রশ্ন, ‘কেন্দ্র একে তো রাজ্যগুলিকে অর্থসাহায্য করছে না। তার উপর আবার অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপাচ্ছে। তাহলে PM CARES তহবিলের কাজটা কী?’ অন্যদিকে কর্ণাটকের বিজেপি সরকার আবার রেলের পাশাপাশি শ্রমিকদের করে ঘরে ফেরানোর জন্য বাসেরও ভাড়া চাইছে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে দলীয় তহবিল থেকে ১ কোটি টাকা দিয়েছে কর্ণাটক কংগ্রেস।
The post ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ভাড়া দিতে নারাজ কেন্দ্র’, ‘লজ্জাজনক’ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা appeared first on Sangbad Pratidin.
