শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কয়েকটি গাছ, মোবাইল টাওয়ার ও সাকুল্যে একটি বাড়ি। চালু হওয়ার ক্ষেত্রে এগুলিই আপাতত বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বার্নপুর বিমানবন্দরের। বার্নপুর এয়ারপোর্টে বিমান পরিষেবায় কেন চালু করা যাচ্ছে না উড়ান পরিষেবা? সংসদে উঠল সেই প্রসঙ্গ। লোকসভায় সম্প্রতি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের এই প্রশ্ন তোলেন। যার জবাব দেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মোহন। মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, রিজিওনাল কানেক্টিভিটি স্কিমে 'উড়ান' প্রকল্পে বার্নপুরে বিমানবন্দর চালু করতে বাধা দূর করার জন্য কেন্দ্রের তরফে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? সমস্যা কি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে?
উড়ান প্রকল্পে বিমান পরিষেবা চালু করার জন্য বার্নপুর বিমানবন্দরের কাছে গাছ, উচ্চক্ষমতা পরিবাহী বিদ্যুতের তার-সহ যে সব বাধা সরানো প্রয়োজন, তা রাজ্য সরকার এখনও দূর করেনি। সেই কারণে ওই প্রকল্প চালু করা যাচ্ছে না। ১ হাজার ২২০ মিটারের ছোট রানওয়ে রয়েছে। বিমানবন্দরকে আধুনিকীকরণ করে ১৮ আসনের ছোটো বিমানই এই রুটে চলবে। উড়ানের অনুমতির আগে ৮টি স্ট্রিট লাইটের খুঁটি, বট, তাল, আম-সহ ২০-২৫টি গাছ, একটি মোবাইল টাওয়ার ও একটি বাড়ির চিলেকোঠাও চিহ্নিত করেন এয়ারপোর্ট অথরিটির আধিকারিকরা। এই বাধা দূর করতেই বেশ কয়েকবার বৈঠক হয় ইসকো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
মন্ত্রী মুরলীধর মোহন জানান, বার্নপুর এয়ারস্ট্রিপ সেলের নিজস্ব জমিতে রয়েছে। সেটি উন্নত করে আঞ্চলিক পর্যায়ে যোগাযোগের উন্নতিতে বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) বিমানবন্দর চালু করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাধার কথা জানিয়েছে। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দর চত্বর ও তার বাইরে উঁচু গাছ, উঁচু বাড়ির মতো কিছু রাখা যায় না। তাই বার্নপুরে বিমানবন্দর চত্বরের মধ্যে সমস্ত বাধা সরানো গিয়েছে। কিন্তু বাইরে বেশ কিছু গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি রয়ে গিয়েছে। সে সব সরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। সেলের তরফে রাজ্য সরকারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কাজ হয়নি। সেই বিমানবন্দরের লাইসেন্স থমকে আছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বিমানবন্দর লাগোয়া ব্যক্তিগত মালিকানাধীন একশোর বেশি গাছ রয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে গাছের মালিকদের ও টাওয়ার কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দেবে এয়ারপোর্ট অথোরিটি অব ইন্ডিয়া। তবে ক্ষতিপূরণের অর্থমূল্য নিয়ে এখনও পাকাপাকি সিদ্ধান্ত হয়নি। ইসকো স্টিল প্ল্যান্টের জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার জানান, প্রায় ৩০ একর জমিতে বিমানবন্দর। তার ভিতরে উঁচু গাছ কেটে ফেলা-সহ সমস্ত বাধা দূর করা হয়েছে। বাইরে সে কাজ না হওয়ায় তাঁরা বিমানবন্দরের জন্য লাইসেন্সের আবেদন জানাতে পারছেন না।
