সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধ্বংসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সৃষ্টির বীজ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা দৈত্য তখন তাণ্ডব চালাচ্ছে ওড়িশার মাটিতে। ভয়ংকর সেই বিপর্যয়ের মাঝেই ত্রাণশিবিরে ভূমিষ্ঠ হল ১৬০০ নবজাতক। দুর্যোগের মাঝে এই সুখবর প্রকাশ্যে আনলেন খোদ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১২ মিনিটে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পূর্বাভাস মতোই ধামড়া এবং ভিতরকণিকার মাঝামাঝি এলাকায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ডানা(Cyclone Dana)। প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া চলেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত ল্যান্ডফল হয়েছে ‘ডানা’র। আছড়ে পড়ার সময়ে ১১০ কিমি বেগে ঝড় হয়েছে বাংলা এবং ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুতি পর্ব সেরে রেখেছিল ওড়িশা সরকার। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে অন্তত ৬ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ে। এই তালিকায় ছিলেন ৪হাজার ৫০০ গর্ভবতী মহিলাও। যার মধ্যে ১৬০০ জন সন্তান প্রসব করেন। বৃহস্পতিবার এই তথ্য প্রকাশ্যে আনেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী জানান, ডানার হানায় ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নামে প্রশাসন। ৬০০৮টি ত্রাণশিবির খোলা হয়। সেখানে জল, ওষুধ, খাবার-সহ প্রয়োজনীয় সব জিনিসের ব্যবস্থা করা হয়। শুধুমাত্র বালাসোর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয় প্রায় ১ লক্ষ ৭৩ হানার মানুষকে। ময়ুরভঞ্জ জেলায় এই সংখ্যাটা ছিল প্রায় একলক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল দুর্যোগপূর্ণ এলাকা থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে আমরা সফল হয়েছে। যার জেরে শুক্রবার পর্যন্ত ডানার দাপটে কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
তবে ‘ডানা’র ল্যান্ডফলের জেরে ওড়িশায় প্রচুর গাছ ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে। ধামড়ার একাধিক এলাকায় গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। তবে ইতিমধ্যেই উপড়ে পড়া গাছ কাটার কাজ শুরু হয়েছে সেখানে। ভুবনেশ্বরে বসে পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। ল্যান্ডফল শেষে বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছেন তিনি। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পর থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে ওড়িশার একাধিক জেলায়।