সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জনপ্রিয় পেন কিলার নিমেসুলাইড এদেশে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। জ্বরজারি হলে কিংবা ব্যথাযন্ত্রণায় কাবু হলে বহু সময়ই চিকিৎসকরা এই ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। কিন্তু এবার কেন্দ্র এই ওষুধের ১০০ মিলিগ্রামের বেশি ডোজকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। মনে করা হচ্ছে, বেশি মাত্রায় নিমেসুলাইড গ্রহণ করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর বিপদ ডেকে আনতে পারে। এমনকী, রোগীর মৃত্যুরও কারণ হতে পারে!
বলা হচ্ছে, বেশি মাত্রায় নিমেসুলাইড গ্রহণ করলে যকৃতের ভয়ংকর ক্ষতি করে দিতে পারে। যার জেরে মৃত্যুর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে একটি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র। কমিটিতে রয়েছে আইসিএমআরও। এর আগে জানুয়ারিতে সিডিএসসিও-র একটি প্যানেলের পরামর্শ মেনে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই নিমেসুলাইডের পশুচিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। পরিবেশ সংক্রান্ত উদ্বেগের ফলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে দেশে শকুনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যাওয়ার পর। প্যানেলের তরফে জানানো হয়েছিল, গবাদি পশুর পেনকিলার হিসেবে নিমেসুলাইডের ব্যবহার শকুনের মৃত্যুর বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি গবেষণার কথাও সামনে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে নিমেসুলাইড ব্যবহারের পরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শকুনগুলি মারা যাচ্ছে!
প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে ইটালিতে আত্মপ্রকাশ করেছে নিমেসুলাইড। এরপর সেটি ভারতে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। যদিও প্রথম থেকেই ওষুধটির ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপানের মতো দেশে চিকিৎসকরা বহুদিন ধরেই লক্ষ করেছিলেন এই ওষুধ ব্যবহারের পর বুকে ব্যথা, বমি, ঝিমোনো ভাব, পেটখারাপের মতো নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ২০১১ সালে এদেশে শিশুদের জন্য নিমেসুলাইড ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। বারো বছর না হলে তা দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্ষীয়ান রোগীদের জন্য তা নিষিদ্ধ ছিল না। কিন্তু আশঙ্কা ছিলই। অবশেষে এই পদক্ষেপ করল কেন্দ্র।
