সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করছেন মহিলা। কয়েক হাত তফাতে বসে থেকেও রোগীর চিকিৎসা করা তো দূর, মোবাইলে রিলে ডুবে রইলেন চিকিৎসক। ফিরেও দেখলেন না রোগীর দিকে। যার জেরে বিনা চিকিৎসায় সেখানেই মৃত্যু হল মহিলার। ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের এক সরকারি হাসপাতালে। গোটা ঘটনার অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন রোগীর পরিজনেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটে উত্তরপ্রদেশের মেইনপুরির মহারাজা তেজসিং জেলা হাসপাতালে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ বছর বয়সি ওই মহিলার নাম প্রবেশ কুমারি। মহিলার পুত্র গুরুশরন সিং জানান, "মায়ের বুকে হঠাৎ প্রবল ব্যাথা শুরু হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম আমরা। সেই সময় হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন চিকিৎসক আদর্শ সেঙ্গার। তবে মায়ের চিকিৎসা না করে তিনি সেখানে বসেই মোবাইলে ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে রিল দেখছিলেন। বার বার তাঁকে আমরা অনুরোধ জানাই রোগীর চিকিৎসা করার জন্য। তবে তাতে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেন উনি। এবং একজন নার্সকে মায়ের চিকিৎসা করার নির্দেশ দেন।"
মৃতার পুত্র আরও জানান, "ক্রমে মায়ের শারীরিক অবস্থা গুরুতর আকার নিলে আমরা ফের ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে অনুরোধ জানাই। এতে অধৈর্য হয়ে তিনি আমার গালে সপাটে চড় বসান। এর পর তিনি চিকিৎসার জন্য এলেও ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে মায়ের।" গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। ৭ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নিজের আসনে বসে মোবাইলে রিল দেখছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। তাঁর হাত দূরে বেডে শুয়ে ছটফট করছেন রোগী। তবে তাতে কোনও হেলদোল নেই চিকিৎসকের। শেষ পর্যন্ত তিনি উঠে এলেও ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে রোগীর। মৃতের পরিবার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুললে একজনকে চড় মারেন তিনি। এরপর হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে।
ঘটনার জেরে ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিরাট পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে আসেন চিফ মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট মদন লাল। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ। গাফিলতির জেরে এই ঘটনা ঘটলে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব আমরা।
