সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তর প্রদেশের পুলিশ হিন্দু রক্ষা দলের সঙ্গে যুক্ত ছয় কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গাজিয়াবাদের শালিমার গার্ডেন কলোনি এলাকায় দুই ডজনেরও বেশি তরোয়াল এবং কিছু কুড়ুল বিতরণ করতে দেখা যায় তাদের। এই অভিযোগেই গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছয় অভিযুক্তকে।
হিন্দু রক্ষা দলের স্থানীয় অফিসে এক সমাবেশের সময় ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, এই মিছিলে অস্ত্র নিয়ে যোগ দেন সংগঠনের সদস্যরা। তাদের মধ্যে অস্ত্র বিতরণের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরেই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
সংগঠনের সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরী-সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, বেআইনি সমাবেশ এবং জনসাধারণের শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এমন ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয়জন কর্মীকে আটক করা হলেও, এখনও পর্যন্ত মোট দশজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ট্রান্স হিন্ডন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নিমিশ পাতিল বলেন, এই দলের দুই ডজনেরও বেশি অজ্ঞাতপরিচয় সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৯১(২), ১৯১(৩) এবং ১২৭(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভূপেন্দ্র চৌধুরী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।
হিন্দু রক্ষা দলের দাবি, বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে হিংসার খবরের পরেই, হিন্দুদের তাদের নিজের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানায় দলটি। এরপরেই, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে আত্মরক্ষার জন্য এই অস্ত্র বিলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাঁরা। ইতিমধ্যেই, ভূপেন্দ্র একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, মুসলিমদের মোকাবেলা করার জন্য ২৫০টি অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, "মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য হিন্দুদের অবশ্যই অস্ত্র রাখতে হবে। হিন্দু রক্ষা দল, হিন্দু সম্প্রদায়কে সাহায্য করবে। আজকাল, বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। সেখানে হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে।" তিনি বলেন, "আমরা হিন্দুদের অবস্থা বাংলাদেশের হিন্দুদের মতো হতে দেব না।"
যদিও, প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িকভাবে সংবেদনশীল অবস্থার মধ্যে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত উস্কানিমূলক। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, যথাযথ লাইসেন্স না থাকলে তরোয়ালের মতো ধারালো অস্ত্র প্রকাশ্যে বিতরণ সাধারণত অস্ত্র আইনে নিষিদ্ধ।
এই ঘটনা উত্তর প্রদেশে আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে নতুন উদ্বেগ সামনে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন ছোট ছোট দলগুলির কার্যকলাপের উপরে প্রশাসনের নজরদারির বিষয়টিও উঠে এসেছে। বিশেষ করে দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে হিন্দু রক্ষা দলের নজরদারি, সংঘর্ষ এবং উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও নতুন নয়।
