সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাঁদানে গ্যাস, পুলিশের লাঠির আঘাত সহ্য করে ফের দিল্লির পথে পা বাড়িয়েছেন দেশের কৃষকরা। এই অবস্থায় হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তকে কার্যত দুর্গে পরিণত করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে বহু কৃষককে। এরই মাঝে শুক্রবার রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে কৃষিমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, 'আমি কৃষকদের আশ্বস্ত করছি, কৃষকদের ফসল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যেই (এমএসপি) কিনবে সরকার।'
কৃষকদের মহামিছিল ও এমএসপি ইস্যুতে রাজ্যসভায় প্রশ্ন উঠলে এদিন কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, "আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি কৃষকদের সমস্ত ফসল এমএসপিতেই ক্রয় করা হবে। এটা নরেন্দ্র মোদির সরকার। এই সরকার যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা পূরণ করে।" একইসঙ্গে বিরোধীদের নিশানায় নিয়ে তিনি বলেন, "যখন বিরোধী দল ক্ষমতায় ছিল, তখন এমএস স্বামীনাথন আয়োগের প্রস্তাব ওরা মানেনি। বিশেষ করে উৎপাদন খরচের ৫০ শতাংশ বেশি অর্থ দেওয়ার বিষয়ে। কংগ্রেসের সরকার কখনও কৃষকদের নিয়ে ভাবেনি। কিন্তু ২০১৯ সালে মোদি সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৫০ শতাংশ বাড়ানো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩ বছর আগে থেকেই সরকার এমএসপিতে ধান, গম, জোয়ার ও সোয়াবিনে ৫০ শতাংশ বেশি দামে ফসল কিনছে।"
তবে সরকার আশ্বাস দিলেও শুধু আশ্বাসে চিড়ে ভিজছে না। কৃষকদের তরফে বার বার দাবি তোলা হয়েছে, শুধু মৌখিক আশ্বাস নয় সংসদে এই বিষয়ে আইন আনা হোক। কৃষকদের তরফে যে ৫ দফা দাবি তোলা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, পুরনো ভূমি অধিগ্রহণ আইনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ১০ শতাংশ প্লট এবং ৬৪.৭ শতাংশ বর্ধিত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ১ জানুয়ারি, ২০১৪ সালের পর অধিগ্রহণ করা জমির জন্য বাজারমূল্যের চার গুণ ক্ষতিপূরণ এবং ২০ শতাংশ প্লট দিতে হবে। এর পাশাপাশি সকল ভূমিহীন ও ভূমিহীন কৃষকের সন্তানদেরও কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের সুবিধা দিতে হবে। এই বিষয়ে অবিলম্বে সরকারি নির্দেশিকা জারি করার দাবি জানিয়েছেন কৃষক নেতারা।
এদিকে কৃষকদের মিছিল আটকাতে শম্ভু সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলে আহত হয়েছেন ছজন। অম্বালায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। অশান্তির আশঙ্কায় হরিয়ানার অম্বালায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তায়। হরিয়ানার পাশাপাশি পাঞ্জাব থেকেও মিছিল যাবে দিল্লিতে।