বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: হাথরাসে পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। মর্মান্তিক সেই ঘটনায় এবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে (Yogi Adityanath) চিঠি লিখলেন সংসদের বিরোধী দলনেতা। যোগীর কাছে তাঁর আর্জি স্বজনহারা পরিবারগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের অর্থ বাড়ানো হোক। পাশাপাশি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন রাহুল।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লোকসভার বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, 'হাথরাসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ১২০ জনের অধিক মানুষের মৃত্যুর খবরে আমি স্তম্ভিত। আমি জানি আপনিও এই ঘটনায় অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছেন। গতকাল সকালে আলিগড় ও হাথরসে মৃতদের শোকাহত পরিবারের সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করেছিলাম তাঁদের মুখ থেকে সেদিনের ঘটনা শুনেছি। এবং অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছিল যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। এই ঘটনা তাঁদের যে ক্ষতি করেছে তা কোনওভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যথাসম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে তাঁদের দুঃখ কিছুটা কম করতে পারি।'
[আরও পড়ুন: ৫ সঙ্গীর মৃত্যুর বদলা! রাজৌরির সেনাক্যাম্পে গুলিবৃষ্টি জঙ্গিদের, আহত জওয়ান]
একইসঙ্গে রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) লেখেন, 'উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে মৃতের পরিবারের জন্য যে অর্থ সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। আমার অনুরোধ এই টাকার অঙ্ক বাড়ানো হোক সরকারের তরফে। এবং যত দ্রুত সম্ভব তা দেওয়া হোক। একইসঙ্গে আহতদের চিকিৎসার জন্যও অর্থসাহায্য বাড়ানো হোক।' উল্লেখ্য, এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে যোগী সরকার। পাশাপাশি রাহুল আরও লেখেন, 'এই গোটা ঘটনার জন্য দায়ী স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি ও অসংবেদনশীলতা। ফলে উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক সরকার। পাশাপাশি মৃতের পরিবারের পাশে থাকুক উত্তরপ্রদেশ সরকার। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্যের হাত বাড়াতে কংগ্রেসের সকল নেতা-কর্মীরা সর্বদা প্রস্তুত।' মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা এই চিঠি নিজের এক্স হ্যান্ডেলেও তুলে ধরেছেন রাহুল গান্ধী।
[আরও পড়ুন: এবার দেওঘরে হুড়মুড়িয়ে ভাঙল তিনতলা বাড়ি, একাধিক জনের চাপা পড়ার আশঙ্কা]
প্রসঙ্গত, হাথরাসের (Hathras Stampede) ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে একের পর এক বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ৮০ হাজার জনের জমায়েতে অনুমোদন দিলেও জানা যাচ্ছে, উপস্থিত ছিলেন আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ। আরও অভিযোগ, আয়োজকরা ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে যেমন সহযোগিতা করেননি তেমনই পদপিষ্টের ঘটনার পরে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাও করেছেন। এত কিছুর পরও নাকি এফআইআরে ভোলে বাবার নাম নেই। উল্লেখ্য, এই ভোলে বাবাকে কেন্দ্র করেই আয়োজিত হয়েছিল অনুষ্ঠানটি। মর্মান্তিক ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরে অবশেষে সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন জানায়, এই ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ৬ জনের মধ্যে ২ জন মহিলা এবং ৪ জন পুরুষ। ওই ৬ জনই সৎসঙ্গের ‘সেবাদার’ অর্থাৎ স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন। ঘটনার পরই পালিয়ে যান এই ৬ জন।