সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির 'ধুন্ধুমার' দেখে স্তম্ভিত বিশ্ব। যেভাবে বৈঠকের মাঝেই কার্যত বের করে দেওয়া হয় জেলেনস্কিকে, তা দেখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিশ্বের নানা দেশই মন্তব্য করেছে। আমেরিকা থেকে ব্রিটেনে গিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই ইস্যুতে নীরব দিল্লি। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ট্র্যাপিজের খেলায় নেমেছে সাউথ ব্লক। আপাতত 'জল মাপাই' কাজ তাদের। কিন্তু কেন?
আসলে অনেকগুলি ফ্যাক্টর মাথায় রাখছে মোদি সরকার। গত জানুয়ারিতে নতুন করে মার্কিন মসনদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তারপর থেকেই (এমনকী তার আগে, ভোটে জেতার পর থেকেই) ব্রিকস গোষ্ঠীর সদস্য দেশগুলির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারির সুরে কথা বলেছেন তিনি। মার্কিন ডলার ব্যবহার না করলেই ১০০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার 'ভয়' দেখিয়েছেন। এরপর ভারতের অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে হাতে হাতকড়া, পায়ে শেকল পরিয়ে ফেরত পাঠানো শুরু হয়। পাশাপাশি ভারতীয় ভোটারদের ‘ভোটদানে উৎসাহ দিতে’ ২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হত এবং এখন তা বন্ধ করা হচ্ছে বলেও হইহই ফেলে দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। সব মিলিয়ে ট্রাম্প ২.০-তে যেন সেই আগের 'ভারতবন্ধু' সুরটা ঠিকমতো বাজছে না। এই বিষয়গুলি নিশ্চিতভাবেই খেয়ালে রেখেছে মোদি সরকার।
তাছাড়া দ্বিতীয়বার মসনদে ফেরা ট্রাম্প যেন আরও বেশি 'খামখেয়ালি'ও! যেভাবে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি, মেজাজ হারালেন, তাতে কার্যতই অবাক অনেকে। হঠাৎই যেন রাশিয়ার দিকে সরে গিয়েছে আমেরিকা! এভাবে বদলে যাওয়া সমীকরণের মধ্যে ট্রাম্প ভারত-চিনের মধ্যে আচমকাই বেজিংকে বেছে নিয়ে বৈঠক করতে বসলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর তাই ট্রাম্পের সমান্তরালে আরও একটি 'ব্লক' তৈরি করে রাখতে চাইছে নয়াদিল্লি। একদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ভারত। তাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে আমেরিকার উপরে অতিরিক্ত নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ না করেও ইউক্রেনের বিষয়েও সাবধানে পা ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। অর্থাৎ সবদিক বজায় রেখে বর্তমান পরিস্থিতিতে এগনোই লক্ষ্য তাদের।
