সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্দেশ এলেই পুনরাবৃত্তি হত অপারেশন ট্রাইডেন্টর! করাচি বন্দর গুঁড়িয়ে দিতে প্রস্তুত ছিল ভারতের 'বিক্রান্ত'। গত ৮ মে রাতের অন্ধকারে আরব সাগরে নেমেছিল আইএনএস বিক্রান্ত-সহ মোট ৩৬টি যুদ্ধ জাহাজ। লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট। জলপথে হামলা হলে তার কড়া জবাব দেওয়া। সূত্র মারফত এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান হামলা চালালে তার উত্তর দিতে সরাসরি করচি বন্দর আক্রমণের পরিকল্পনাও ছিল ভারতের। রবিবার সাংহাদিক সম্মেলনে নৌসেনার অ্যাডমিরাল এএন প্রমোদ জানালেন, ৯ মে রাতে পাকিস্তানের করাচি বিমানবন্দর সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে প্রস্তুত ছিল নৌসেনা। অপেক্ষা ছিল শুধু ভারত সরকারের নির্দেশের।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, আইএনএস বিক্রান্তের সঙ্গে মোট ৮ থেকে ১০টি শক্তিশালী যুদ্ধ জাহাজ আরব সাগরে নেমেছিল। প্রতিটিতেই রাখা ছিল ব্রহ্মস-সহ একাধিক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র। এমনকী রাতের অন্ধকারে প্রস্তুত ছিল ৬টি সাবমেরিনও। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মোট ৩৬টি যুদ্ধজাহাজ আরব সাগরে তৈরি ছিল। নিয়মিত মহড়ার বাইরে গিয়ে এটি ভারতীয় নৌসেনার বৃহত্তম ‘রিয়েল-টাইম অপারেশনাল মুভমেন্ট’ ছিল বলেই জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, বিপদ বুঝে সেই রাতে করাচি বন্দরে তৎপরতা শুরু করে দিয়েছিল পাকিস্তান। করাচিগামী সমস্ত বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। জল, স্থল এবং বায়ু সোনার সাঁড়াশি চাপে ভয় পেয়েই কি তাহলে সংঘর্ষবিরতির পথে হাঁটল ইসলামাবাদ? বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সঙ্গে সংঘাতে লাগাতার পিছিয়ে পড়ছিল পাকিস্তান। পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই সন্ধিপ্রস্তাব করে শাহবাজ শরিফ সরকার।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরস্ত্রকে হত্যা করে লস্করের সঙ্গী সংগঠন টিআরএফের পাঁচ জঙ্গি। পালটা ৭ মে অপরেশন সিঁদুর চালায় ভারত। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। এই অভিযানে অন্তত ১০০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়। এরপর রাজস্থান, পাঞ্জাবের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে ড্রোন হামলা চালায় পাকিস্তান। পালটা লাহোর, করাচি-সহ পাকিস্তানের একাধিক শহরে আঘাত হানে ভারত। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার ইসলামাবাদের মিনতিতে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে করাচি বন্দরে অত্যন্ত সফল এবং ভয়াবহ হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় নৌবহর। একের পর এক মিসাইলের আঘাতে দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছিল পাক বন্দর এবং পড়শি দেশের যুদ্ধ জয়ের স্বপ্ন। এই অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন ট্রাইডেন্ট’। এই অত্যন্ত গোপন অভিযানে অংশ নিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনার তিনটি যুদ্ধ জাহাজ– আইএনএস নিপাত, আইএনএস নির্ঘাত এবং আইএনএস বীর।
