সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরনো এক মানহানি মামলায় গ্রেপ্তারি। তবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আদালতে নির্দেশে জেল থেকে মুক্ত হলেন 'নর্মদা বাঁচাও' আন্দোলনের নেত্রী তথা স্বনামধন্য সমাজকর্মী মেধা পাটেকর। শুক্রবার দুপুরে দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনার দায়ের করা ২৪ বছরের পুরনো এক মানহানির মামলায় মেধাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে দিল্লির আদালত ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নেত্রীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ঠিক কী এমন মামলা, যা নিয়ে ২৪ বছর পরও এত শোরগোল? জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন নিয়ে যখন একেবারে চূড়ান্ত ব্যস্ত মেধা পাটেকর, দিকে দিকে তাঁদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন মানুষজন, সেসময় তৎকালীন ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সিভিল লিবার্টিজ’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি ছিলেন বর্তমান দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা। তাঁর সংগঠন নর্মদা আন্দোলনের বিরোধিতা করে বিজ্ঞাপন দেয়। এর পালটা মেধাও সাক্সেনার বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ তোলেন। নেত্রীর অভিযোগ ছিল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির তৎকালীন সভাপতি ভিকে সাক্সেনা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশ থেকে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত। গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'এজেন্ট' হিসেবেও তিনি চিহ্নিত করেছিলেন সাক্সেনাকে। তাতে মেধা পাটেকরের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন ভিকে সাক্সেনা।২০০৩ সালে মামলাটি দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।
এই মামলায় আগেই মেধা পাটেকরের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের হয়েছিল। বুধবার প্রবেশন বন্ডের জন্য তাঁকে আদালতে হাজিরা দিতে হতো। কিন্তু ওইদিন তিনি আদালতে হাজিরা এড়িয়ে যান। আর সেই কারণেই শুক্রবার পুলিশ গ্রেপ্তার করে সত্তর বছর বয়সি সমাজকর্মীকে। এদিন আদালতে মেধার আইনজীবী সওয়াল করেন, ''জামিন অযোগ্য মামলায় গ্রেপ্তারি নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে আমরা প্রবেশন বন্ডে সই করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক, আজই আমি প্রয়োজনীয় নথিপত্র পেশ করব।'' তাঁর বক্তব্য শুনে দিল্লিতে সাকেত কোর্টের বিচারক বিপিন খারব জানান, ''সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে আমি মুক্তির নির্দেশ দিতে পারব না। অর্থাৎ প্রবেশন বন্ড সংক্রান্ত যা করা দরকার, তা করতেই হবে।'' এরপর প্রবেশন বন্ডের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় কয়েকঘণ্টার মধ্যে মেধা পাটেকর মুক্তি পান। মেধা পাটেকরের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ জানিয়েছে এসইউসিআই। এনিয়ে প্রেস বিবৃতি জারি করেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ।
