সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহার নির্বাচনে লজ্জার হারের পর নয়া অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। জানা যাচ্ছে, গত সপ্তাহে সম্প্রতি কংগ্রেস সাংসদ তথা দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পিকে। সোনিয়া গান্ধীর ১০ জনপথের বাসভবনে দেখা হয়েছিল দু'জনের। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। আলোচনার বিষয়বস্তু জানা না গেলেও এই ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে জল্পনা তৈরি করেছে।
সোমবার সংসদে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে এই সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেননি তিনি। বলেন, "এটাও কি খবর?" প্রিয়াঙ্কা বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করতে না চাইলেও এই সাক্ষাৎকে মোটেই সামান্য হিসেবে দেখছে না রাজনৈতিক মহল। কারণ, কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক প্রশান্ত কিশোরের। ২০২১ সালে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (JDU) ছেড়ে দেওয়ার পর কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন পিকে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০২২ সালে কংগ্রেসের ভোটকুশলীর দায়িত্বও পালন করেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই তৈরি হয় লোকসভার লড়াইয়ের নীল নকশা। যদিও পরে সেই সম্পর্কে ইতি টানেন বর্তমান জন সুরজ প্রধান। এহেন পিকের প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে এই সাক্ষাতের পর রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বিহার থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার হয়ত পুরনো দলে ফিরতে পারেন ভোটকুশলী।
আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বৈঠক নিয়ে কংগ্রেস বা পিকের দল কেউই মুখ খোলেনি ঠিকই, তবে বৈঠকের বিষয় অস্বীকার করেনি কেউই। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে এক নয়া সমীকরণ উসকে দিচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বিহার নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার নয়া সমীকরণ তৈরি করতে চান প্রশান্ত কিশোর। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে জনসুরজের জোটের অঙ্কও সামনে আসতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দল গড়ে নিজে ব্যর্থ হলেও ভোট কুশলী হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে পিকের। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারের জমি শক্ত করার বিনিময়ে দেশের বাকি রাজ্যে কংগ্রেসের ভোটকুশলীর দায়িত্ব পালন করতে পারেন পিকে। অনুমান যাই হোক না কেন, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পিকে যে অঙ্ক কষছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, এবারের বিহার নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের সম্মুখীন হয় পিকের দল জনসুরজ পার্টি। একটিও আসন জিততে পারেনি। তাদের ২৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩৬ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। কংগ্রেসের হালও অতিব খারাব। ২৪৩টি আসনের মধ্যে ৬১টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ছয়টিতে জয় পেয়েছে তারা। যেখানে ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৯টি। এই অবস্থায় পিকে কংগ্রেসের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে চাইছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
