সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: শীর্ষ আদালতে তিন মাসের জন্য পিছিয়ে গেল আরজি কর মামলার শুনানি। নতুন বেঞ্চ তৈরির পর মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে শোনা হয় এই মামলা। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৭ মার্চ। অর্থাৎ তিন মাস পর।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মঙ্গলবার সিবিআইয়ের তরফে আদালতকে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে ট্রায়াল। এই মামলায় মোট সাক্ষী ৫১ জন। তার মধ্যে ৪৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। বাকি গুলিও শীঘ্রই শেষ হবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই ট্রায়াল চলছে। সিবিআইয়ের তরফে যে তদন্ত চলছে তা মূলত তিনটি পথে চলছে, খুন ও ধর্ষণের মূল মামলা, তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও আর্থিক দুর্নীতি। এই প্রেক্ষিতেই শুনানি চলার সময়ে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “ডিএনএ রিপোর্ট করা হয়েছে? রিপোর্ট কোথায়?” জবাবে তুষার মেহতা বলেন, “রিপোর্ট মিলে করেছে।"
পাশাপাশি আরজি কর আর্থিক দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, অন্য কোর্টে এই বিষয়ে মামলা চলছে। একইসঙ্গে রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, “দুই অভিযুক্ত সরকারি পদে কাজ করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্যের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না।” যদিও সিবিআইয়ের দাবি মানেননি রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে এমন কোনও তথ্য নেই।' পালটা সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, ২৭ নভেম্বর সরকারি পদে কাজ করা দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রাজ্যের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। ২৯ নভেম্বর চার্জশিট দেওয়া হয়।
এছাড়া এদিনের শুনানিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী অনুরোধ জানান, রাজ্যের পদক্ষেপের উপর নজরদারি করতে নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করা হোক। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি জানান, "আপনাদের যা বলার ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের কাছে বলুন। টাস্ক ফোর্সকে আমরা নির্দেশ দিতে পারি।" এ বিষয়ে একটি ইমেল আইডি চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয় ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সকে। সেখানে যাবতীয় অভিযোগ জানাতে পারবেন চিকিৎসকরা। সব খতিয়ে দেখে ১২ সপ্তাহ পরে রিপোর্ট দেবে টাস্ক ফোর্স।
একইসঙ্গে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, "ওই সংক্রান্ত মামলাটি হাই কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। তাই ওই আবেদনটির শুনানি হবে না।" সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আগামী ১৭ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি।