সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ত্রিভাষা নীতি ইস্যুতে মহারাষ্ট্র উত্তাল হতেই সুরবদল! হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তানের আদর্শ ভুলে আরএসএস বুঝিয়ে দিল, সংঘ কোনও ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষে নই। আরএসএসের প্রধান মুখপাত্র সুনীল আম্বেকর এই ইস্যুতে বললেন, "ভারতের সব ভাষাই জাতীয় ভাষা। আর মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে বহুদিন ধরেই সওয়াল করে আসছে সংঘ।"
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা নিজের মাতৃভাষাতেই পড়াশোনা করতে পারবে। তারপর থেকে তাঁদের ৩টি ভাষা শিখতে হবে। যদিও, এই ভাষাগুলি নির্বাচন করতে পারবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। কোনও রাজ্যের উপর কোনও ভাষা চাপিয়ে দেবে না। কিন্তু একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে ওই নীতিকে ব্যবহার করে হিন্দি পড়ানো বাধ্যতামূলক করার প্রচেষ্টা হয়েছে। তা নিয়ে আবার প্রতিবাদও হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে হিংসাত্মক প্রতিবাদও হয়েছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ মহারাষ্ট্র।
মহারাষ্ট্রে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণের পথে হেঁটেও প্রবল বিরোধিতার জেরে শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে ফড়ণবিসের জোট সরকার। সম্প্রতি তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েও নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাতে খানিক মুখ পুড়েছে বিজেপির। এই চক্করে আবার এক ছাতার তলায় চলে এসেছেন রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে। এরপরই সংঘের তরফে বলা হল,"সংঘ বরাবরই বিশ্বাস করে সব ভারতীয় ভাষাই রাষ্ট্রভাষা। তাছাড়া মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের কথা অনেক আগেই থেকেই বলে আসছে সংঘ।"
বস্তুত হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান সংঘ তথা বিজেপির পুরনো এজেন্ডা। বিরোধীদের অভিযোগ, সংঘ বিশ্বাস করে এক দেশে দুই নিশান, দুই বিধান বা বহু ভাষা থাকলে সেই দেশের ঐক্যবদ্ধ হওয়া কঠিন। সম্ভবত সেকারণেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর হিন্দির প্রসারে এত জোর দিচ্ছে। কিন্তু তাতে যে আসলে হীতে বিপরীত হচ্ছে, সেটা সম্ভবত বুঝতে পারছে আরএসএস। সেকারণেই ভাষা নিয়ে কিছুটা সুর নরম। আবার সংঘের এই বক্তব্যকে বিজেপির জন্য বার্তা হিসাবেও দেখছেন কেউ কেউ।
