নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: হোলির আগেই বিজেপির নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা হবে বলে জল্পনা ছিল অনেকদিন ধরেই। কিন্তু হোলি পার হওয়ার পরেও এবিষয়ে বিজেপির তরফ থেকে কোনও সাড়াশব্দ নেই। বর্তমান সভাপতি জে পি নাড্ডা আর ৪০ দিন সভাপতি থাকবেন বলেই ঠিক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সংঘ পরিবার ও দলের মধ্যে মতানৈক্যর কারণেই বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় সভাপতির নাম চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ, তথা সংঘ পরিবার বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সংঘের সবুজ সংকেত ছাড়া এই পদে কাউকে বসানো হয়েছে, এমনটা আগে কখনও হয়নি। সেই মতোই অনেকটা আগে থাকতে এবারও সংঘের কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে বিজেপির পক্ষ থেকে যাদের নামই সভাপতি পদের জন্য ভাবনা চিন্তা করা হয়েছে তাতে সংঘ বাদ সেধেছে বলে সূত্রের খবর।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে সংঘ এমন কাউকে চাইছে যার আনুগত্য দলের পাশাপাশি সংঘ পরিবারের প্রতিও সমানভাবে থাকবে। অথচ, বিজেপির তরফ থেকে যে নামই ভাবা হচ্ছে তাদের আনুগত্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিকেন্দ্রিক বলে মনে করছে সংঘ।
২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের সময়ে সংঘ পরিবারের পরামর্শ না মেনে চলার ফল ভুগতে হয়েছে বিজেপিকে। উত্তরপ্রদেশে সংঘ পরিবার সেভাবে কাজ না করায় হু-হু করে সেখানে আসন কমেছে বিজেপির। যার ফলস্বরূপ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেক দূরেই থাকতে হয়েছে বিজেপিকে। তাই এবার আর সংঘের মতকে অগ্রাহ্য করে সভাপতি পদে কাউকে বসনোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না গেরুয়া শিবিরও।
এর পাশাপাশি, সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনের জন্য দেশের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৩৬টির মধ্যে অন্ততপক্ষে ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৮টি জায়গায় সাংগাঠনিক নির্বাচন জরুরি। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১২টি রাজ্যে সেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলা-সহ উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, ওড়িশা, তামিলনাডু, কর্নাটক, কেরল, তেলঙ্গানার মতো রাজ্যগুলির সাংগাঠনিক নির্বাচন আটকে রয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসের ২০ তারিখের আগে বিজেপির নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এদিনে দিন যত এগোচ্ছে, ততই সভাপতি পদের দৌড়ে নামের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। মহিলা সভাপতি হতে পারেন বলে জল্পনাও রয়েছে।