সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের আপত্তি উড়িয়েই পাকিস্তানের জন্য ১০০ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে আইএমএফ। ‘জঙ্গিদের মদতদাতা’ দেশকে এই ঋণ দেওয়া নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল নয়াদিল্লির। কিন্তু লাভ হয়নি। ঋণ পেয়ে গিয়েছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার গুজরাটের ভুজ এয়ারবেসে দাঁড়িয়ে রাজনাথ সিং দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের উচিত পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা। তারা সেটা করবে কিনা বলা যাচ্ছে না, কিন্তু আপাতত প্রশ্ন উঠছে, কেন ভারত রুখতে পারল না পাকিস্তানের ঋণপ্রাপ্তি?
প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লি মূলত দু'টি কারণ দেখিয়েছিল পাকিস্তানের ঋণ পাওয়া রুখতে। প্রথমত, পাকিস্তান এর আগেও বারবার আইএমএফের থেকে ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেই অর্থে সংস্কারের তেমন কিছুই করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, ওই বিপুল অর্থ সন্ত্রাসে মদত দিতে ব্যবহৃত হবে। সুতরাং ঋণ না পেলে সেটা ব্যাহত হবে। কিন্তু ভারতের এই সব ওজোর-আপত্তি কিছুই শেষপর্যন্ত ধোপে টেকেনি। আইএমএফের ঋণ পেয়েই গিয়েছে পাকিস্তান।
এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের এক ভোট- এক দেশ পদ্ধতি এখানে নেই। আইএমএফ বোর্ড সদস্যদের ক্ষেত্রে সেই দেশের আর্থিক কাঠামো ও অর্থভাণ্ডারে তাদের অবদান একটি ফ্যাক্টর। যার ফলে যেখানে সবচেয়ে বেশি ভোটাধিকার আমেরিকার (১৬.৪৯ শতাংশ), সেখানে ভারতের ক্ষেত্রে তা মাত্র ২.৬ শতাংশ। তাছাড়া কোনও প্রস্তাব পেশ হলে তার বিরোধিতা করা যায় না। কেবলমাত্র সমর্থন কিংবা ভোটদান থেকে বিরতই থাকা যায়। আর অঙ্কের এই প্যাঁচপয়জারেই শেষপর্যন্ত ভারতের পক্ষে পাকিস্তানের ঋণপ্রাপ্তি আটকানো সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের অর্থনীতির কোমর ভেঙেছে বহু আগেই। গত কয়েক বছর ধরে আইএমএফের ঋণের উপর টিকে রয়েছে শাহবাজের দেশ। সেই ধারা অব্যাহত রেখে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ফের আইএমএফের কাছে গিয়েছিল ইসলামাবাদ। ভারতের মূল আপত্তির কারণ হিসেবে প্রথম যুক্তি এমনকী পাক বিশেষজ্ঞরাও এড়াতে পারছেন না। আমেরিকায় নিযুক্ত প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি বলছেন, ''আইএমএফের দ্বারস্থ হওয়াটা আইসিইউয়ে ভর্তি হওয়ার মতো। কোনও রোগী যদি ২৪ থেকে ২৫ বার আইসিইউয়ে ভর্তি হয়, তাহলে মানতেই হবে পরিকাঠামোয় বিস্তর গোলমাল হয়ে রয়েছে।''
