shono
Advertisement

ধন্যি বন্ধুত্ব! ১৩০০ কিমি পেরিয়ে করোনা আক্রান্ত বন্ধুকে অক্সিজেন পৌঁছে দিলেন যুবক

বন্ধুত্বের এমন অনন্য নজির দেখে সকলেই বিস্মিত।
Posted: 06:22 PM Apr 28, 2021Updated: 06:54 PM Apr 28, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্ধুত্ব। আপাত ভাবে ছোট্ট একটা শব্দ। কিন্তু তার ব্যাপ্তি নিঃসন্দেহে অনেক বড়। রক্তের সম্পর্ক কিংবা অন্য কোনও ধরনের বন্ধন নয়, হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয়ের যোগই এখানে সব কিছু। রাঁচির (Ranchi) দেবেন্দ্রকুমার শর্মা যখন জানতে পেরেছিলেন বন্ধু রজন কোভিড (COVID-19) আক্রান্ত এবং তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে অক্সিজেন প্রয়োজন, তিনি দূরত্বের পরোয়া করেননি। ১ হাজার ৩০০ কিমি অবলীলায় পেরিয়ে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) হাজির হয়ে গিয়েছিলেন! বন্ধুত্বের এমন নজির দেখে সকলেই বিস্মিত।

Advertisement

ঠিক কী ঘটেছিল? ২৪ এপ্রিল সঞ্জয় সাক্সেনা নামের এক বন্ধুর কাছ থেকে ফোন পান দেবেন্দ্র। জানতে পারেন, রজনের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। অথচ মাত্র ২৪ ঘণ্টার অক্সিজেন অবশিষ্ট আছে! এমন খবর পাওয়া মাত্র আর মাথা ঠিক রাখতে পারেননি দেবেন্দ্র। সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন বাড়ি থেকে। সারা রাত বাইক চালিয়ে ১৫০ কিমি পেরিয়ে হাজির হন বোকারোয়। সেখানেও অক্সিজেনের কোনও খবর নেই।

[আরও পড়ুন: নৈশ কারফিউ ভেঙে মাঝরাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান, বন্ধ ত্রিপুরার রাজপরিবারের বিয়েবাড়ি]

অগত্যা ঝাড়খণ্ড গ্যাস প্ল্যান্টের মালিকের কাছে গিয়ে হাজির হন দেবেন্দ্র। যে করে হোক অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগবে। তিনি তো অবাক সব শুনে! এমন বন্ধুও হয়! অক্সিজেনের ব্যবস্থা তো তিনি করে দিলেনই। তার বিনিময়ে কোনও অর্থও নিলেন না। জানিয়ে দিলেন, আগে রজতের কাছে এটা পৌঁছে যাক। তারপর ভাবা যাবে।
এরপর শুরু হল গাজিয়াবাদ যাত্রা। একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে তাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার তুলে দীর্ঘ ১ হাজার ৩০০ কিমি পথ পেরলেন দেবেন্দ্র। ২৫ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে টানা ২৪ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ২৬ এপ্রিল সেখানে পৌঁছন তিনি। এমন প্রয়াস বিফলে যায়নি। অক্সিজেন পেয়ে রজন আপাতত বিপন্মুক্ত। এখনও চিকিৎসাধীন থাকলেও আশঙ্কার কিছু নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

কেন বন্ধুর বিপদের কথা শুনেই সঙ্গে সঙ্গে পথে নেমে আসেন দেবেন্দ্র? আসলে রজন ও দেবেন্দ্রর এক বন্ধু সঞ্জীব, গাজিয়াবাদে একই হাউসিংয়ে থাকতেন যিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৯ এপ্রিল। বন্ধুর মৃত্যুশোক দূর থেকে শুনে কাতর হয়ে পড়েন দেবেন্দ্র। এরপরই রজন অসুস্থ হয়ে পড়লে আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি তিনি। আর তাঁর এমন অভিনব প্রয়াসে প্রাণ বাঁচল বন্ধুর। বাকি বন্ধু ও রজনের পরিজনদের কাছে এখন সত্যিই একজন ‘হিরো’ হয়ে উঠেছেন দেবেন্দ্র। হয়ে উঠেছেন এমন এক বন্ধু, যাঁকে কেবল সিনেমা কিংবা বইয়ের পাতাতেই দেখা যায়।

[আরও পড়ুন: ঠিক যেন সিনেমা! স্ট্রেচার নয়, কোভিড রোগীকে নিয়ে হাসপাতালের করিডরে ছুটল স্কুটার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement