নব্যেন্দু হাজরা: শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের (Bangladesh) বাড়িতে। প্রায় দুশো বছর আগে। দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন মা কালীর আরাধনা। পাঁঠাবলি, আরতি, ভোগ বিতরণ। পরদিন ভাসান। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) মাঝেই মা কালীর পুজো হত চৌধুরিবাড়িতে। তারপর দেশ ভাগের পর পূর্ববঙ্গ থেকে এপার বাংলায় এসেছে গোটা পরিবার। ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন নানা প্রান্তে। কিন্তু পুজো বন্ধ হয়নি। প্রত্যেকবার পরিবারের এক একজন সদস্য পুজোর ভাগ নেন। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও যা হচ্ছে এবার নাকতলায়। আজ রাতেই মহাঅষ্টমীর তিথি পড়ে যাওয়ায় হবে পুজো। পাঁঠাবলিও।
ঢাকা (Dhaka) বিক্রমপুর কুশারীপাড়ার বর্ধিষ্ণু পণ্ডিতবাড়ির সদস্য চৌধুরি পরিবারের পরিজনরা। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, ঐতিহ্যের পারিবারিক পুজো ছিল মহাষ্টমী কালীপুজো। এই অভিনব পুজোর বয়স অনুমানিক ২০০ বছর। সে সময় ওখানে এই পুজোর বিরাট নাম ছিল। তেমন ছিল আয়োজনও। আত্মীয়–পরিজন পুজোর কয়েকদিন আগেই পৌঁছে যেত। অষ্টমীতে বহু আমন্ত্রিতের উপস্থিতিতে সারা রাত ধরে চলত পুজো, আরতি, পাঁঠাবলি এবং ভোগপ্রসাদ বিতরণ।
[আরও পড়ুন: ঐতিহ্য রক্ষাই শেষ কথা, করোনা কালেও কমছে না চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীর উচ্চতা]
সেই চৌধুরি পরিবার স্বাধীনতার পর ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় কলকাতায় (Kolkata) এসে। তবুও পারিবারিক পুজো বন্ধ হয় না। এক বাড়ি থেকে ছড়িয়ে যায় ছয় বাড়িতে। সেই থেকে চলে আসছে পালা করে পুজো। নাকতলা, বেহালা, শুকচর ইত্যাদি বিভিন্ন চৌধুরি পরিবারে পুজো এখনও উদযাপন হয় উৎসাহে আনন্দে সনাতনী আচারে–ভক্তিতে। এবার বাড়ির পুজো হবে নাকতলায় ঈশ্বর অমলেন্দু চৌধুরির বাড়িতে।
পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয় অনেক আগে থেকেই। বাড়ির কর্তা সুরজিৎ চৌধুরি জানান, পুজোর সব আয়োজন করেন বাড়িরই ছোট–বড় ছেলে, মেয়ে, বউরা মিলে। প্রবীণরা থাকেন সদাসতর্ক, যাতে কোনও বিচ্যুতি না হয়। মহাষ্টমী কালীপুজোর কথা এই চৌধুরি পরিবার ছাড়া কিন্তু আর শোনা যায় না।