সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার শুরু হল কাঠুয়া গণধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি। নারকীয় এই ঘটনার বিচারপর্ব শুরু হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীরের সিজিএম আদালতে। এই মামলা রাজ্যের বাইরে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছেন নির্যাতিতর আইনজীবী দীপিকা রাজাওয়াত।
তবে সমস্ত বাধা পেরিয়ে শুনানি শুরু হলেও এখন ধর্ষণ ও খুন হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে কাঁপছেন দীপিকা। মৃত্যু ভয় তাঁকে তাড়া করে ফিরছে। প্রাণ বাঁচাতে সুপ্রিম কোর্টে দরবার করতে চলেছেন দীপিকা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, ‘আমি জানি না কতক্ষণ বেঁচে থাকব। যে কোনও সময় ধর্ষিতা হতে পারি। শ্লীলতাহানি তো ঘটতেই পারে। আমাকে খুন করাও হতে পারে। ইচ্ছা করে আমাকে হত্যা করে দুর্ঘটনা হিসাবে দেখানো হতে পারে। আমাকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা তোমাকে ভুলিনি।’ সেকারণেই নিজের বিপদ জানাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছি।’
[অনলাইনে টিকিট কাটার আগে রেলের নয়া নিয়মগুলি জেনে রাখুন]
আজ সিজেএম আদালতে কাঠুয়া গণধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে। তার আগে আইনজীবীর এহেন বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চলবে শুনানি। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন নাবালকও রয়েছে। যে আসিফাকে জোর করে গ্রামের মন্দিরের মধ্যে আটকে রেখেছিল। এরপর আসিফাকে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বারবার ধর্ষণ করা হয়। লাগাতার ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে ওই নাবালিকাকে খুন করা হয়। আসিফা গণধর্ষণ ও খুনের ভয়াবহতা দেখে চমকে উঠেছে গোটা দেশ। গোটা ঘটনার ভয়বহতা উপলব্ধি করে তদন্তে নেমেছে স্বয়ং বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া(বিসিআই)। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ও চেয়ে নিয়েছে বিসিআই। তথ্য যাচাইয়ের জন্য খুব শিগগির বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার তরফে পাঁচজন সদস্য কাঠুয়া ও মন্দির পরিদর্শনে যাবেন। এই পাঁচ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন বিসিআই প্রধান তরুণ আগরওয়াল, শীর্ষকর্তা এস প্রভাকরণ, রামচন্দ্র জি শাহ, উত্তরাখণ্ডের বিসিআই সদস্যা রাজিয়া বেগ ও আইনজীবী নরেশ দীক্ষিত প্রমুখ। তাঁরা জম্মু কাশ্মীরের বার অ্যাসোসিয়েশনে যাবেন। সেখানকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। কাঠুয়ায় ঘটনাস্থল, নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলবেন। প্রতিবেশীদের কাছেও ঘটনার বিশদ জানবেন।
ইতিমধ্যেই কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের সমর্থন করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি যে দুই মন্ত্রী বিরুদ্ধে সেই চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা এবং লাল সিং পদত্যাগ করেছেন। রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ওই তুই পদত্যাগী মন্ত্রীর ইস্তফা গ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য, গত ১০ জানুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া গ্রাম থেকে আসিফাকে অপহরণ করে একদল দুষ্কৃতী। ওই দুষ্কৃতীদের মধ্যে ছিল স্থানীয় পুলিশকর্মীরাও। ছিল দুই নাবালকও। দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করে শেষে খুন করা হয়। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সাঞ্জি রামের লক্ষ্য ছিল, রাসসানা এলাকা থেকে বাখরেওয়াল সম্প্রদায়কে হটানো। আর তাই বাখরেওয়াল সম্প্রদায়ের আসিফাকে শিকার বানিয়ে বাকিদের মনে ভয় ধরাতে চেয়েছিল। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসারকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[নাবালিকাকে গণধর্ষণের জেরে উত্তাল পাটনা, অবরোধ-বিক্ষোভে স্তব্ধ শহর]
The post কাঠুয়া গণধর্ষণ মামলার শুনানি শুরু, প্রাণরক্ষায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ নির্যাতিতার আইনজীবী appeared first on Sangbad Pratidin.