সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা হওয়া মুখের কথা না। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, তার জন্য পরিণত হয়ে উঠতে হয় নারী শরীরকে। একটা বয়সে পৌঁছতে হয়। কিন্তু এই পৃথিবীতে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যার হিসেব মেলে না কিছুতে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতোই সেইসব ঘটনা অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তব। যেমন বিশ্বের কনিষ্ঠতম মা লিনা মেদিনার (Lina Medina) গল্প হলেও সত্যি! যে বয়সে মায়ের কাছ ছাড়ে না মেয়ে, সেই বয়সে মা হয়েছিলেন তিনি। পাঁচ বছর বয়সে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন পেরুর বাসিন্দা লিনা।
লিনার জন্ম হয়েছিল পেরুর টিক্রাপোতে। বাবার নাম টিবুরেলো মেদিনা, মা ভিক্টোরিয়া লোসিয়া। লিনারা ছিলেন ৯ ভাইবোন। বাকিরা কিন্তু ‘স্বাভাবিক’। শুধু লিনাই বড় হচ্ছিল হুড়মুড় করে। বিশেষ করে একটা সময় লিনার স্তনের বৃদ্ধি চোখে পড়ছিল সকলের, যা সেই বয়সে দেখা যায় না।
[আরও পড়ুন: OMG! বাসে উঠে ৩০ টাকা ভাড়া দিতে হল মোরগকে! ব্যাপারটা কী?]
দিনটা ছিল ১৯৩৯ সালের ১৪ মে। ৫ বছরের ছোট্ট লিনা জন্ম দেয় পুত্র সন্তানের। ছেলের নাম রাখা হয় গেরার্ডো। যে চিকিৎসক লিনার অস্ত্রোপচার করেছিলেন তাঁর নামেই হয় সদ্যজাতের নাম। জানা যায়, লিনার সন্তানের ওজন ছিল ২ কিলোগ্রাম ৭০০ গ্রাম। অর্থাৎ কিনা সব দিক থেকে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেয় লিনা।
যদিও ৪০ বছর বয়সে লিনার এই সন্তানের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে লিনা বিয়ে করেছেন ১৯৭০ সালে। বছর দুই পরে দ্বিতীয় সন্তান হয়। এদিকে চিকিৎসক গেরার্ডো লোজাডার ক্লিনিকেই সেক্রেটারির কাজ জুটিয়ে নেন। স্বাভাবিক জীবন চর্চার মধ্যে থাকলেও নিজের পরিস্থিতি নিয়ে ঘনিষ্ঠ বৃত্ত ছাড়া কারও সঙ্গে কখনও আলোচনা করতেন না। যদিও লিনা চান আর না চান তিনি চিকিৎসকদের গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছেন ততদিনে। পেরুর বিখ্যাত লা প্রেসি মেডিকেল জার্নালে তাঁকে নিয়ে বহু গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই জানা যায়, ৮ মাস বয়স থেকেই ঋতুস্রাব শুরু হয়েছিল তাঁর। অর্থাৎ তখন থেকেই প্রজননশীল হয়ে পড়েছিল সে। কিন্তু এমনটা কেন?
[আরও পড়ুন: রেললাইনে পড়ে যাওয়া শিশুকে বাঁচাতে লাফ প্রৌঢ়ের, মাথার উপর দিয়ে চলে গেল মালগাড়ি! তারপর…]
হাজার গবেষণার পরেও এই রহস্যের সমাধান হয়নি। এবং আরও একটি বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে, প্রজননশীল হলেও কী করে গর্ভবতী হল লিনা? উত্তর হল, ধর্ষিতা হয়েছিল ছোট্ট মেয়ে। মনে করা হয় লিনাকে ধর্ষণ করেছিল পরিবার বা প্রতিবেশীদের কেউ। যদিও সেই সব কথা ভুলে যেতে চান বর্তমানে ৮৮ বছরের বৃদ্ধা লিনা। যার জীবনে এত বড় আশ্চর্য ঘটেছে, দীর্ঘ জীবনে সংবাদ মাধ্যমের হাজার অনুরোধেও একটি সাক্ষাৎকারও দেননি তিনি।