সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তামিলনাড়ুর বিষমদকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫। এখনও চিকিৎসাধীন বহু। এর মাঝেই বিষমদ সরবরাহের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় সে-ই মূল অভিযুক্ত। এর আগেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়েছে ৭ জন। এবার পুলিশের জালে মূল পান্ডা। এমনকী সেরাজ্যের তিরুচিরাপল্লী জেলা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় আড়াইশো লিটার অবৈধ মদ। এখনও চলছে তল্লাশিঅভিযান।
গত বুধবার রাতে তামিলভূমের কল্লাকুড়িছি জেলায় বিষমদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু মানুষ। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সকলকে। বৃহস্পতিবার তাঁদের মধ্যে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর মেলে। তার পর গত দুদিনে পাল্লা দিয়ে বাড়ে অসুস্থের সংখ্যা। অন্তত ১৯৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ, শনিবার জানা গিয়েছে, বিষমদ খেয়ে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৫ জন। কল্লাকুরিচি মেডিক্যাল কলেজ,পুদুচেরির, সালেম, ভিলুপুরম এবং জিপমের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে চিকিৎসা চলছে বাকিদের। বুধবারের এই কাণ্ডের পরই মূল অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: পরীক্ষা দুর্নীতি রুখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কেন্দ্রের, রয়েছেন ইসরো, এইমসের প্রাক্তন কর্তারা]
শনিবার, কল্লাকুড়িছি পুলিশ জানিয়েছে, চিন্নাদুরাই নামে এক ব্যক্তিকে বিষমদ সরবরাহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, সে করুণাপুরমে চোলাই মদ সরবরাহ করত। সেখান থেকে তা নানা প্রান্তে পৌঁছে যেত। আর ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে সাধারণ মানুষ।
ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করার কথা আগেই জানিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এই ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। কল্লাকুড়িছিতে বিষমদ খেয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রয়েছে। যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী তাঁদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে আধিকারিকরা এই কাণ্ড রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’তার পরই জেলা কালেক্টর এবং জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন স্ট্যালিন। তাঁর নির্দেশে শুরু হয় তল্লাশি। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকে সাসপেন্ডও করে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষমদকাণ্ডে শোকপ্রকাশ করেছিলেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবি। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন,’কল্লাকুড়িছিতে বিষমদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রয়েছে। যাঁদের চিকিৎসা চলছে আমি তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ তিনি আরও জানান, ‘প্রায়শই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ধরনের ঘটনার খবর মেলে। যা খুবই উদ্বেগের বিষয়।’ ফের বিষমদের কারণে প্রাণহানি রুখতে সরকারকে কড়া নজরদারি চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।