সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রেকর্ড ভোট পেয়ে ফের রাশিয়ার মসনদে বসেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। আর ক্ষমতার রাশ হাতেই পেয়েই নাকি চিন সফরের কল্পনা করে ফেলেছেন তিনি। গোটা ঘটনাপ্রবাহের উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব মজবুত করে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্কে’র জাল আরও ছড়ানোর পরিকল্পনা করতে পারে চিন। এই আবহেই বন্ধু পুতিনকে ফোন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কী কথা হল দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে?
সোমবার ফলপ্রকাশ হয়েছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের। বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন পুতিন। ওইদিনই এক্স হ্যান্ডেলে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদি। আজ, বুধবাকের রুশ রাষ্ট্রনেতা ফোন করলেন তিনি। জানা গিয়েছে, এদিনও পুতিনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাশিয়ার মানুষের শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করেছেন নমো। এএনআই সূত্রে খবর, দুজনের কথোপকথনে আরও একবার ভারত-রাশিয়ার মজবুত বন্ধুত্বের কথা উঠে এসেছে। কৌশলগত দিক দিয়ে আগামিদিনে দুদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে মতামত বিনিময় করেছেন তাঁরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও পুতিন সঙ্গে কথা বলেছেন মোদি। বৈঠক ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে ভারতের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। আগামিদিনেও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে সম্মত হয়েছেন দুই রাষ্ট্রনেতা।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় ফের অপহৃত ভারতীয় ছাত্র! কিডনি বেচার হুমকি দিয়ে মুক্তিপণ দাবি ড্রাগ মাফিয়াদের]
বলে রাখা ভালো, মঙ্গলবারই জানা গিয়েছিল আগামী মে মাসে চিন সফরের পরিকল্পনা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গত বছরের অক্টোবরেও বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের ১০ বছর পূর্তিতে বন্ধু জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে বেজিং গিয়েছিলেন পুতিন। প্রায় আট মাসের ব্যবধানে ফের রুশ প্রেসিডেন্টের চিন সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসাবেই দেখছেন কূটনীতিকরা। গোটা ঘটনা প্রবাহের উপর নজর রাখছে ভারতও। মুখে চিন যাই বলুক না কেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পকে আসলে ফাঁদ বলেই ভাবেন অনেকে। পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে ঋণের জাল ছড়িয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। ভারত বরাবর এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে। কারণ, চিনা প্রকল্পের একটি অংশ গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। ফলে দিল্লির বন্ধু মস্কো এই প্রকল্পে কতটা বেজিংকে সাহায্য করে সেদিকেই নজর রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলের। এই আবহে মোদি-পুতিনের এদিনের কথোপকথন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হিসাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গত কয়েক দশকের। অতীতে বহুবার ‘বন্ধু’ মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন পুতিন। আসন্ন লোকসভা ভোটে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যও কামনা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের রাশিয়া সফরে বড় ঘোষণা করেছিল মস্কো। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছিলেন, এবার ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অন্তর্গত ভারতে অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করবে রাশিয়া। এই পদক্ষেপের দ্রুত অগ্রগতি হচ্ছে।