সুকুমার সরকার, ঢাকা: কাজের প্রতি প্রবল দায়িত্ববোধ থাকলেই বোধহয় এমনটা দেখা যায়। রোদ, ঝড়বৃষ্টি, শীত উপেক্ষা করে ছুটিহীন সেবা দিয়ে চলেছেন বাংলাদেশের (Bangaldesh) ঝিনাইদহের সাব্দালপুর রেল গেটের প্রহরী ফাতেমা খাতুন সুমি। গেট কিপারের কাজ করতে গিয়ে তিন বছরে একদিনও ছুটি কাটাননি তিনি। সেইসঙ্গে সামলাচ্ছেন নিজের সংসারও। কোনও ক্লান্তি নেই তাঁর।
কর্মক্ষেত্রে যেখানে অনেকেই কোনও না কোনও অজুহাতে ছুটি কাটাচ্ছেন, সেখানে একজন নারী হয়ে লাল-সবুজ পতাকা হাতে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশনে সিগন্যালের (Signal) দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। যে কারণে ইতিমধ্যে ওই স্টেশনে দুর্ঘটনা (Accident)শূন্যে নেমে এসেছে। এমনকি জনসাধারণের নিরাপত্তা ও নিরবচ্ছিন্ন রেলযাত্রা (Railway) নিশ্চিত করে চলেছেন দিনের পর দিন। তাতেই প্রশংসা কুড়োচ্ছেন সব মহলে। দুই পুত্রসন্তানের জননী ফাতেমা কোটচাঁদপুর উপজেলার সাব্দালপুর বাজারের ইদ্রিস আলির মেয়ে, তাঁর স্বামী মনিরুল ইসলাম বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে ভাটপাড়ায় শুটআউট, তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে বোমা-গুলি]
সাব্দালপুর টি-৬০ রেল গেটের দুই পাশের রাস্তায় নেই কোনও স্পিড ব্রেকার। এমনকী কোনও রেল ব্যারিকেডও নেই। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যস্ততম এই রেল গেটটিতে সর্বক্ষণের নিরাপত্তা দিয়ে চলেছেন ফাতেমা খাতুন। সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন যাতায়াতের সময় গেটটি নিরাপদ রাখতে দায়িত্ব পালন করছেন সাহসী এই নারী। কারণ, তিনিই এই রেল গেটের গেটম্যান (Gate Keeper)। ট্রেন আসার সিগন্যাল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পথচারীদের সতর্ক করে সবুজ পতাকার মাধ্যমে ট্রেনকে সংকেত দেন – লাইন ক্লিয়ার আছে। সংকেত দেখে পথচারীরাও দুই দিকে ট্রেনটি অতিক্রম করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। রেল গেটটি স্টেশনের তালিকাভুক্ত নয়, যে কারণে সেখানে নেই কোনও প্রতিবন্ধক ও গেটম্যান দাঁড়ানোর ঘর। রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থেকে তিন বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এই নারী গেটম্যান।
[আরও পড়ুন: দিঘার মোহনায় মিলল পেল্লাই হাঙর, ওজন জানলে চমকে যাবেন!]
দ্রুত রেল ব্যারিকেড ও গেটম্যানের ঘর করার দাবি তুলেছেন স্থানীয়দের। গেটকিপার ট্রাফিক ফাতেমা খাতুন সুমি জানান, ব্যারিকেড না থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে সর্বক্ষণ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা হয়। তবে দাঁড়ানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা থাকলে ভাল হতো। ঝিনাইদহের সাব্দারপুর সহকারী স্টেশন মাস্টার গোলাম রসুল জানান, গেটটি উন্মুক্ত হওয়ায় সেই দায়িত্ব সঠিকভাবেই পালন করে আসছেন ফাতেমা।