সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইনের চোখে চুরি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এক শ্রেণির সম্পদের আধিক্যে অন্যপক্ষের খিদে মেটানোই যখন দুস্কর হয়ে ওঠে, সেখানে সামাজিক দৃষ্টিতে চুরি কি অপরাধ? সম্পদের সমবণ্টনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এহেন চুরি কতখানি 'অপরাধ' তা আলাদাভাবে বিচারের দাবি রাখে। আইন ও নৈতিকতার এমনই একাধিক জটিল প্রশ্ন সমাজের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল এক বাইক চোর। পেটের টানে চুরিকে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও এক ক্যানসার আক্রান্তের চিকিৎসায় নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিলেন তিনি। একজন অপরাধীর এমন মানবিক পদক্ষেপ মন কেড়ে নিল নেটিজেনদের।
একটা সময়ে পেটের টানে চুরির পথে নেমেছিলেন অশোক ওরফে এপ্পল। এর পর সেটাকেই কার্যত পেশা হিসেবে বেছে নেয় সে। দিনে ফল বিক্রেতা ও রাতে চুরি এই ছিল তাঁর কারবার শহরের দামি কেটিএম ও পালসারের মতো বাইককে নিশানা করত সে। তবে চুরির পথে নামলেও মানবিকতা হারিয়ে ফেলেনি অশোক। দুর্দিনে তাঁকে আশ্রয় দেওয়া বন্ধুর ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসায় নিজের সর্বস্ব দান করে নজর কাড়লেন বাইক চোর।
[আরও পড়ুন: বিদেশি মুদ্রা মামলায় স্বস্তিতে হিরো কর্তা, তদন্তে স্থগিতাদেশ দিল্লি হাই কোর্টের]
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি অশোক ও তাঁর সঙ্গী সতীশ বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি সংস্থার ইঞ্জিনিয়রের বাইক চুরি করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনার পিছনে রয়েছে দাগি চোর অশোক। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ১৫টি মামলা রয়েছে পুলিশের খাতায়। এমনকী অন্য একটি মামলায় জেলবন্দী ছিল এই ব্যক্তি। এক মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে। তাঁকে পাকড়াও করার পর চুরির মালের সন্ধানে নামে পুলিশ। আর তা করতে গিয়েই চমকে ওঠেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: বাজেটের পরই বিরাট ধাক্কা আম্বানির, লাভের গুড় খেলেন আদানি]
জানা যায়, অশোকের স্ত্রীর তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অশোককে আশ্রয় দিয়েছিল তাঁর এক বন্ধু। সেই বন্ধুর স্ত্রী বর্তমানে ক্যানসার আক্রান্ত। বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানো বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে ভোলেনি অভিযুক্ত চোর। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত বন্ধুর স্ত্রীর চিকিৎসায় নিজের সর্বস্ব বন্ধুকে দিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে মানবিক চোরের এমন কীর্তি শুনে পুলিশ কর্তারা মুগ্ধ হলেও আইনি পথে 'রবিনহুড' অশোকের কোমরে দড়ি পরানোর প্রক্রিয়ায় অবশ্য কোনও খামতি রাখা হয়নি পুলিশের তরফে।