সঞ্জিত ঘোষ, কৃষ্ণগঞ্জ: ধর্ম না দেখে শুধু ভালোবাসার টানেই মেয়ে ভালোবেসেছিল এক যুবককে। প্রেমিক ছিলেন ভিন ধর্মের। সেই কারণে পরিবারের মত ছিল না এই সম্পর্কে। কিন্তু ভালোবাসা তো বাধা মানে না কখনও! তাই পরিবারের অমতেই প্রেমিককে বিয়ে করেছিল নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আর তার 'শাস্তি' পেতে হল তাঁকে। মেয়ের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে শনিবার জীবিত কন্যার শ্রাদ্ধ করল পরিবার। যা দেখে অবাক প্রতিবেশীরাও।
কৃষ্ণগঞ্জের খাটুরা উত্তরপাড়ায় বাড়ি ওই কলেজ ছাত্রীর। পরিবারের অমতে ভিন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বিয়ে করায় তাঁর উপর নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া! পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবার তরুণীর সমস্ত ছবি, জামাকাপড়, বই ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। রীতিমতো শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে মেয়ের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলে পরিবার ঘোষণা করে, 'মেয়ে তাদের কাছে আজ থেকে মৃত।'
কৃষ্ণগঞ্জে জীবিত কলেজছাত্রীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ ছাত্রীর বাবা কর্মসূত্রে ইজরায়েলে। মেয়ের এমন সিদ্ধান্তে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কাকা সোমনাথ বিশ্বাস জানান, আগে ছেলেটির সঙ্গে বাড়ির মেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে একবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়, কিন্তু ফের পালিয়ে যায়। তাঁরা শুনেছেন যে ভিন ধর্মের ছেলেটির সঙ্গে গোপনে বিয়েও সেরেছে মেয়ে। এবার তাই আর মেয়েকে ক্ষমা করতে পারবেন না তাঁরা। সোমনাথবাবু আরও বলেন, "পুরোহিত ডেকে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ওর ছবিতে মালা দিয়ে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করেছি। মেয়ে আমাদের ভালোবাসা-সম্মান কিছুই বোঝেনি, আজ থেকে সে আমাদের মেয়ে নয়।''
পরিবারের এমন কাণ্ডে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দ্বিধাবিভক্ত পড়শিরা। কেউ কেউ ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ালেও পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করায় জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। সবমিলিয়ে এই ঘটনা সমাজে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।