সংবাদ প্রততিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে এমনিতেই তাদের দেখা পাওয়া দুর্লভ। দীর্ঘ ৮ বছর পর যাও বা দেখা মিলল তবে তার পরিণতি খুব একটা সুখকর হল না। চোখের সামনে হঠাৎ পোলার বিয়ার বা মেরু ভাল্লুকের আবির্ভাবে ভয়ের চোটে তাকে গুলি করে মারল পুলিশ। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে নর্থওয়েস্ট আইসল্যান্ডে।
একটা সময় শীতের দেশ আইসল্যান্ডে আকছার দেখা মিলত ধপধপে সাদা মেরু ভল্লুকের। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে গত ৮ বছরে এই এলাকায় দেখা মেলেনি বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীর। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার নর্থওয়েস্ট আইসল্যান্ডে হঠাৎ দেখা মেলে এক মেরু ভাল্লুকের। প্রাণীটির দেখা পেয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয়রা ভাল্লুকের ভয়ে এলাকা ছাড়লেও আইসল্যান্ডে সামার হাউসে থেকে গিয়েছিলেন এক মহিলা। দুর্ভাগ্যবশত তারই ঘরে ঢুকে পড়ে ভাল্লুকটি। বাড়ির নোংরা ফেলার জায়গায় হঠাৎ ভাল্লুকটিকে দেখতে পেয়ে সিঁড়ির নিচে লুকিয়ে পড়েন তিনি। ওই অবস্থায় যোগাযোগ করেন মেয়ের সঙ্গে। খবর যায় পুলিশের কাছে। এর পর বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে ভাল্লুকটিকে গুলি করে মারে পুলিশ।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ভাল্লুকের আতঙ্কে বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রাণীটিকে মেরে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন তারা। জানা গিয়েছে মৃত ভাল্লুকটির ওজন ১৫০-২০০ কেজি। তার দেহ পরীক্ষার জন্য ইনস্টিটিউট অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি ফর ফারদার স্টাডি-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিতান্ত কোনও উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রাণীটিকে মেরেছেন তাঁরা। দাবি করা হয়েছে, পোলার বিয়ার সংরক্ষণ করা হয় আইসল্যান্ডে। তবে মানুষের প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে তবেই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
যদিও বাস্তবে মেরু ভাল্লুকের মানুষের উপর আক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। রিপোর্ট বলছে, ১৮৭০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এই দীর্ঘ বছরে মাত্র ৭৩টি আক্রমণের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের এবং আহত হয়েছেন ৬৩ জন। এদিকে প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে শেষবার এই এলাকায় দেখা গিয়েছিল মেরু ভাল্লুক। মূলত খাবারের খোঁজেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সমুদ্র ডিঙ্গিয়ে এই সব এলাকায় চলে আসে প্রাণীগুলি। তবে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর এমন করুণ পরিণতিতে ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা।