সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোরানের অবমাননার জের। থানা থেকে টেনে হিঁচড়ে যুবককে বের করে পিটিয়ে মারল পাকিস্তানের (Pakistan) উন্মত্ত জনতা। কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল পুলিশ। পরে দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কোনওরকমে আটকায় পুলিশ কর্মীরা। নৃশংসা ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের নানকানা সাহিব শহরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ভিডিও দেখে নিন্দায় সরব নেটিজেনরা।
মৃতের নাম মহম্মদ ওয়ারিশ। বয়স বছর ২০-এর আশেপাশে। অভিযোগ, ইসলাম ধর্মের অপমান করেছিলেন তিনি। অবমাননা করেছিলেন ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানের। অভিযোগ পেয়ে নানকানা সাহিবের পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অভিযোগ, শহরের উন্মত্ত জনতা থানায় ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ওয়ারিশের পা ধরে টানতে টানকে থানার বাইরে নিয়ে এসে চলে অকথ্য অত্যাচার। ছিঁড়ে ফেলা হয় পোশাক। লোহার রড, বাঁশ দিয়ে চলে মারধর। গণপিটুনিতে মৃত্য়ু হয় ওই যুবকের।
[আরও পড়ুন: নিচুতলায় রাম-বাম জোটে সায়! পঞ্চায়েতে সব আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয়, নাড্ডাকে জানাল বঙ্গ BJP]
এ প্রসঙ্গে নানকানা সাহিবের পুলিশের মুখপাত্র মহম্মদ ওয়াকাস সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, থানায় পুলিশের সংখ্যা খুব কম ছিল। তাই উন্মত্ত জনতাকে আটকানো যায়নি। পরে অন্য থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে সেখানে। তাদের চেষ্টায় দেহ উদ্ধার করে আনা হয়। দেহটি জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানে এ ধরনের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ধর্মের অবমাননার অজুহাতে বহু ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পিটিয়ে মারা হয়েছে সে দেশে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে মহিলা, শিশুদেরও। এমনকী. শ্রীলঙ্কার এক নাগরিককেও একই অজুহাতে হত্য়া করা হয়েছিল পাকিস্তানে। সেই ঘটনায় অবশ্য ৬ জনের মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া হয়। পাকিস্তানের আইন বলছে, ধর্মের নিন্দা বা অবমাননা করলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আইন বা বিচারের পথে হাঁটে না সে দেশের নাগরিকদের একাংশ। পিটিয়ে প্রকাশ্যেই হত্যা করা হয় ধর্মের অবমাননায় অভিযুক্তকে। সেই তালিকায় এবারের নয়া সংযোজন নানকানা সাহিব শহরের এই খুনের ঘটনা।