সুকুমার সরকার, ঢাকা: লাগামহীন করোনা সংক্রমণ, মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়ছে মৃত্যু। তা রুখতে লকডাউন চলছে বাংলাদেশে (Bangladesh)। তবে ইদের (Eid) আগে ঢাকা এবং অন্যান্য জায়গা থেকে নিজেদের বাড়ি ফেরার হিড়িক পড়েছে। তাতেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এবার আন্তঃজেলা বাস পরিবহণ-সহ সব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করল শেখ হাসিনা প্রশাসন। কিন্তু তাতেও ঘরমুখো মানুষজনকে রোখা যাচ্ছে না। ফেরি পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় দেখা গেল, সাঁতরেই নদী পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতি সামলাতে মাওয়া, শিমুলিয়া ফেরিঘাট, ঢাকার অদূরে পদ্মারই পাটুরিয়া ফেরিঘাট, টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুতে প্রচুর পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) মোতায়েন করা হয়েছে।
রবিবারও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ফেরার জন্য মানুষের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে। কেউ কেউ রোগী সেজে অ্যাম্বুল্যান্সে চড়েই ফেরার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও অনেকে ছুটছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু দূরপাল্লার বাসও চলাচল করছে। রবিবার ভোর থেকে এসব নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের সহায়তায় বিজিবি মোতায়েন করা হয় ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলাগামী সড়কপথগুলিতে। সকালে বিআইডব্লিউটিসি মানুষের চাপ সামাল দিতে পাঁচটি লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে একটি ফেরি ফরিদপুর শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছাড়ে। এই সময় প্রচুর মানুষ গাদাগাদি করে ফেরিতে উঠে পড়েন। পাটুরিয়া ঘাটে লোকজনের চাপে এমন কাণ্ড ঘটে যে, ছাড়ার আগে ফেরির ডালা তোলা যাচ্ছিল না। পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করায় ফেরির যাত্রীসংখ্যা কিছুটা কমে।
[আরও পড়ুন: অবশেষে আগুন নিভল সুন্দরবনে, রক্ষা পেল বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য]
এরপরে ফেরি শাহ পরান ঘাটে এলে যাত্রীরা নামার আগেই প্রায় হাজার হাজার মানুষ ফেরিতে উঠে যান। সেখান থেকে ৫০০র বেশি যাত্রী নিয়ে ফেরিটি ছেড়ে যায়। এই ফেরিতেও তিল ধারনেরও জায়গা ছিল না। তবে এখনও হাজার হাজার যাত্রী পারাপারের অপেক্ষায় আছে। সব ঘাটেই থিকথিকে ভিড়। সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব উপেক্ষিত। সরকারি নিয়ম মেনে চলার কোনও বালাই নেই। ফেরিঘাটের আশপাশে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই জেলে নৌকা-সহ ট্রলারে যাত্রীরা পদ্মা পার হওয়ার চেষ্টা করে। নৌপুলিশ এ পর্যন্ত ১২টি নৌকা আটক করেছে।
[আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার অভিনন্দন বার্তায় আপ্লুত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পালটা ধন্যবাদ জানালেন মমতা]
বহরের ১৬ ফেরির মধ্যে জরুরি পরিষেবায় ২-৩ টি ফেরি (Ferry service) চলাচল করছে। মুন্সিগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, ”সংক্রমণের ঝুঁকির কথা ভেবে জনসাধারণকে এবারের ইদে ঘরমুখো না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তারপরও লোকজনের ঢল নামছে, তাই বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।”