shono
Advertisement
Personal Finance

সম্পদ চাই? দীর্ঘমেয়াদের কথা মাথায় রেখে এগোন

চারপাশে ব‌্যবসা-বাণিজ‌্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কর্মহীনতা বাড়ছে।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 04:36 PM Jun 02, 2025Updated: 04:36 PM Jun 02, 2025

ইনডেক্স নিয়ে বেশি মাতামাতি হোক, বা আরও বিশদে বললে, বিনিয়োগকারীরা সূচকের গতিবিধি দেখেই কেবলমাত্র লগ্নির সিদ্ধান্ত নিন, এমন চান না শ্রী বিজয় মন্ত্রী। জেএলআর মানির পক্ষে মার্কেটের অতি পরিচিত মুখ হিসাবে তাঁর ধারণাগুলো শুনলেন নীলাঞ্জন দে। কত্থোপকথনের নির্যাস–

Advertisement

সূচক-নির্ভরতা কমানোর কথা বলেছেন, একটু বুঝিয়ে বলুন।
দেখুন, আমার বিশ্বাস শুধুমাত্র সূচকের ওঠাপড়াকে প্রাধান‌্য দেওয়া ঠিক নয়, যদিও উপস্থিত অনেকেই তা করতে অভ‌্যস্ত হয়ে উঠেছেন। নিফটির উদাহরণ দিয়েই বলি। দশ, পনেরো, কুড়ি, পঁচিশ হাজার নিফটি হয়েছে, আমরা দেখছি। প্রতিবারই ইনডেক্সের উত্থানে শোরগোল পড়ে যায়। নিফটির গঠন বদলে যায়, কম্পোজিশনে পরিবর্তন আসে, কিন্তু প্রত্য়েকবারেই প্রায় সেই একই ন‌্যারেটিভ বাজারে প্রবলভাবে চলে আসে। এবং একই সঙ্গে কিছু চালু-চলতি ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়ে ওঠে অনেক সাধারণ ইনডেক্সরদের মনের মধ্যে। এটা খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয় বলে আমি মনে করি।

আর একটু প্রাঞ্জল করুন। কোন চলতি ধারণার দিকে ইঙ্গিত করছেন?
আচ্ছা, বোঝানোর চেষ্টা করছি। যে বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা মাঝে মাঝেই শুনতে পাবেন, সেগুলো এই রকম –
ক। কেবল মুম্বইয়ে বসে স্বল্প সংখ‌্যক কিছু সংস্থা পুরো বাজার “ম‌্যানিপুলেট” করছে!
খ। সমস্ত কার্যকলাপই FII -অর্থাৎ ফরেন ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন দ্বারা চালিত। আজ যদি সেইসব FII ভারতীয় বাজার থেকে হঠাৎ বিদায় নেয়, তাহলে কী হবে?
গ। এলআইসি-র মতো মুষ্টিমেয় সরকারী সংস্থাই বাজারকে আগলে রেখেছে, হয়তো দিল্লি থেকে সেই রকমই অর্ডার আছে!
ঘ। আর ফান্ড ম‌্যানেজাররা তো খালি নিজেদের ন‌্যাভ সামলে রাখতে ব‌্যস্ত, তাঁরা আর ইনভেস্টরদের সম্পদ রক্ষা করছেন কোথায়!
ঙ। এছাড়াও তো আপনি খুব ভালোই জানেন, চারপাশে ব‌্যবসা-বাণিজ‌্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কর্মহীনতা বাড়ছে। আর কনসাম্পশন তো তেমন তাগড়া নয়, দেখাই যাচ্ছে!

এই সব কথাবার্তা চলতেই থাকে বিনিয়োগকারীদের মহলে, তাই না? এর সঙ্গে জুড়ে দিন আমার সবসময়ের “ফেভারিট” সংলাপের সারাংশ –
“আজ স্টক বিশ শতাংশ উঠল, তো কাল পাঁচ শতাংশ পড়ে গেল। ফান্ডামেন্টালস কোথায়? সবই তো ম‌্যানিপুলেশন মনে হয়!”
আমার বক্তব‌্য খুব সহজ। বহু বছর ধরে আমি এই জাতীয় আলোচনা শুনে আসছি। নিফটি যখন অনেক কম ছিল, তখনও শুনতে পাওয়া যেত, আজও এই সমস্ত প্রসঙ্গ নিয়ে মানুষ সরব। এই যে নিফটি ২৫,০০০ পয়েন্টের আশেপাশে, তা থেকে বোঝা যায় যে কেবল সূচকের উত্থান হয়েছে নয়, ইনভেস্টরদের সম্পদও বেড়েছে। ইক্যুইটির কারণে ওয়েলথ বেড়েছে, এই কথাটাই আসল।

কিন্তু ইক্যুইটির মতো অ‌্যাসেট ক্লাস সম্বন্ধে তো এমন ধ‌্যান-ধারণা থাকতেই পারে....
মনে রাখুন ইক্যুইটিই একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু সবকিছুর তা নয়। অন‌্যান‌্য অ‌্যাসেটও আছে – যেমন ধরুন গোল্ড। বিশ্বের নানা সেন্ট্রাল ব‌্যাঙ্ক তো গোল্ড নিজেদের আয়ত্বে আনার চেষ্টা করে। ভারতে বা চিনে সাধারণ গৃহস্থরা গোল্ড কিনেই থাকেন, দামও বাড়ে। তবু কেউ তা নিয়ে এত উত্তেজিত হন না! সব নজর শুধু ইক্যুইটির দিকে কেন?

কেবলই সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে, ইক্যুইটির ক্ষমতা সম্বন্ধে সন্দিহান, তাও বুঝিয়ে দেন তাঁরা। বাজারে তো উত্তেজনা, বা শোরগোল, কিছুরই অভাব নেই। এত কিছুর মধ্য়ে ইক্যুইটি সম্পদ গঠন করে চলে, এবং ভবিষ‌্যতেও তাই দেখতে পারব আমরা। বাজার থেকে দূরে থাকেন যাঁরা, তাঁদের জন‌্য এই মেসেজটা আমি দিতে চাই স্পষ্টভাবে। ন‌্যারেটিভ বদলাবে, সূচকের গঠন বদলাবে, তাতে মূল বিষয়টা কিন্তু একই থেকে যাবে। ওয়েলথ চাই? তাহলে দীর্ঘমেয়াদের কথা মনে রেখে এগিয়ে যান। ইক্যুইটির যাত্রায় অংশ নিন, আর তার জন‌্য যা যা করা প্রয়োজন করুন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শুধুমাত্র সূচকের ওঠাপড়াকে প্রাধান‌্য দেওয়া ঠিক নয়, যদিও উপস্থিত অনেকেই তা করতে অভ‌্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
  • দশ, পনেরো, কুড়ি, পঁচিশ হাজার নিফটি হয়েছে, আমরা দেখছি। প্রতিবারই ইনডেক্সের উত্থানে শোরগোল পড়ে যায়।
  • নিফটির গঠন বদলে যায়, কম্পোজিশনে পরিবর্তন আসে, কিন্তু প্রত্য়েকবারেই প্রায় সেই একই ন‌্যারেটিভ বাজারে প্রবলভাবে চলে আসে।
Advertisement