ভারতে এই প্রথম সিলভার ইটিএফ-কে অনুমোদন দিল সেবি। স্বাভাবিকভাবেই আগামী দিনগুলিতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাগুলি রুপোয় লগ্নির জন্য ইটিএফ বাজারে আনবে। কীভাবে এতে বিনিয়োগ করবেন, কী কী বিষয়ে সতর্ক থাকবেন, জানালেন অঞ্জন দাস
গত সপ্তাহের সেবি আমাদের দেশে প্রথমবার ‘সিলভার ইটিএফ’-এর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলি রুপোয় লগ্নির জন্য এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড আনবে বলে মনস্থির করেছে বলে জানা গিয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারী কিভাবে এই শ্রেণির ইটিএফ-এ অ্যালোকেশন করতে পারেন, তা জানার জন্য আমরা যোগাযোগ করেছিলাম দীর্ঘদিনের সিলভার মার্কেটে ট্রেডিং-এ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শ্রী অঞ্জন দাস-এর সঙ্গে। তাঁর কথায়, “দেখুন, প্রথমেই বলতে চাই যে মার্কেট নিয়ন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এর জন্য ভারতীয় লগ্নিকারীর সামনে এক নতুন বিকল্প, এবং সেই সঙ্গে সুযোগ, আসতে চলেছে। এতদিনে সিলভার ট্রেডিং বলতে যে চিত্রটি ফুটে উঠত তার মূলে ছিল ফিজিকাল হোল্ডিং ও বেচা-কেনা। অবশ্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে, অনলাইন লেনদেন বেশ কিছু বছর ধরেই চালু। এটি বেশ জনপ্রিয়ও বটে। ইটিএফ এগুলিরই স্থায়ী একটি ‘বিকল্প’ হয়ে উঠবে বলেই আমি মনে করি।”
[আরও পড়ুন: প্রপার্টির বাজারে লগ্নির সুযোগ, তবে মাথায় রাখতে হবে এই বিষয়গুলি]
লগ্নি বিশেষজ্ঞ অঞ্জন দাস আরও বলেন, “সিলভার নিয়ে আমি যা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তার ভিত্তিতে বলতে চাই যে এই ‘হোয়াইট মেটাল’ সাধারণ লগ্নিকারীর জন্য উপযোগী, এবং প্রত্যেকের উচিত পোর্টফোলিওর অন্তত কিছু অংশ এর জন্য সংরক্ষিত রাখা। এমনিতেই গোল্ড, সিলভার ও অন্যান্য কমোডিটি নিয়ে পৃথিবীজোড়া চর্চা চলছে, ইটিএফ ব্যবহার করে ছোট-বড় বহু বিনিয়োগকারী এগুলিতে সঞ্চয় করেন, অনেকেই খুব উদ্যমী হয়ে নিয়মিত ক্রয়-বিক্রয়ও করে থাকেন। এদেশেও গোল্ড ইটিএফ নিয়ে এক শ্রেণির লগ্নিকারী যথেষ্ট উৎসাহ দেখিয়েছেন, সিলভারের ক্ষেত্রেও তাই-ই হবে আগামী দিনগুলিতে। তবে সময় লাগবে, কারণ সব ইনভেস্টরগণ এখনও সড়গড় নন বলেই আমার ধারণা।
মার্কেট নিয়ন্ত্রককের সদর্থক ভূমিকা এ ব্যাপারে অবশ্যই প্রশংসনীয়, আমি বলব। এর সঙ্গে অবশ্য যা আলাদাভাবে বলতে চাই তা হল রিস্ক। দেখুন, ঝুঁকি সমস্ত কমোডিটি মার্কেটেই আছে, এবং লগ্নিকারীরই দায়িত্ব এ ব্যাপারে নির্দিষ্টভাবে পড়াশোনা করে নেওয়া। এমনিতেই সোনা-রুপো ‘ইনফ্লেশন হেজ’ (inflation hedge বা hedge against inflation, যাই বলুন) হিসাবে কাজ করে, অনেক সময় পোর্টফোলিওকে সুরক্ষা দেয়, দৃঢ়তর করে।”
পরিশেষে দাস জানিয়েছেন, সিলভার ইটিএফ বিনিয়োগকারীর হাতে সুন্দর একটি অস্ত্র হিসাবে থাকতে পারে। ভবিষ্যতে রুপোর বাজারের প্রতি মানুষ আরও উৎসাহী হবে, কেনাবেচার বহরও বাড়বে। তাতে নতুন একটি দিক খুলে যাবে।
লেখক রুপো ট্রেডিং বিশেষজ্ঞ