Advertisement
'ভাসমান অরণ্য' থেকে 'লুকোনো গ্রাম', মানুষ সরতেই হারানো ভূমি দখল করল প্রকৃতি! দেখুন ছবি
জীবনের শূন্যস্থান পূরণে ব্যস্ত প্রকৃতি।
মানুষ ধ্বংস করে, তবু সৃষ্টির চরিত্র থেকে সরে না প্রকৃতি। সবুজ গাছ, রঙিন ফুলে জীবনের শূন্যস্থান পূরণ হয়। কোভিড মহামারীর সময়ে লকডাউন চলাকালীন কংক্রিটের শহরের দখল নিয়েছিল মহাপ্রকৃতি। গোটা পৃথিবীতে এমন বেশ কিছু জায়গা রয়েছে, যেখানে মানুষের ছেড়ে যাওয়া সম্পত্তির দখল নিয়েছে প্রকৃতি। শুধু তাই নয়, সেখানে পরিত্যক্ততার সৌন্দর্য দেখে বিমুগ্ধ মানুষ। একদা ভুতূড়ে জায়গাই হয়ে উঠেছে পর্যটনস্থল। এই গ্যালিরিতে রইল তেমন পাঁচ কাহিনি।
চিনের হাংঝো উপসাগরের শেংশান দ্বীপে একটি ছোট গ্রাম হোটোউওয়ান। ১৯৮০ সালে এই গ্রামে ৩ হাজার বাসিন্দা ছিল। ১৯৯০-এর পর থেকে দুর্গম অবস্থানের কারণে তারা কাছের শহর সাংহাইয়ে চলে যেতে থাকে। ২০০২-এ গ্রামটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জনশূন্য ঘোষণা করা হয়। অচিরেই গ্রামটির দখল প্রকৃতি। ফুল-লতা-পাতা-ঘাসে ঢাকা পড়ে গোটা গ্রাম। পরিত্যক্ত গ্রামটি আজ পর্যটকদের অন্যতম দ্রষ্টব্য। বিশেষ করে কুয়াশাচ্ছন্ন দিনে এবং জ্যোৎস্না রাতে রূপকথার জনপদ হয়ে ওঠে হোটোউওয়ান।
১৯৬৯ সালে জার্মানির বার্লিন শহরে তৈর হয় স্প্রিপার্ক। অচিরেই যা শহরবাসীর অন্যতম পছন্দের গন্তব্য হয়ে ওঠে। পার্কে ছিল মজার সব রাইড। তাছাড়া নকল সুড়ঙ্গ, বিশাল রোলার কোস্টার, অসংখ্য ফুলের গাছ। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের সন্নিবেশ ঘটেছিল স্প্রিপার্কে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের জেরে ২০০২ সালে পার্কটি বন্ধ হয়ে যায়। হোটোউওয়ানের মতোই পরিত্যক্ত স্প্রিপার্কের দখল নেয় প্রকৃতি। আজ প্রকৃতির সেই অপার লীলা দেখতেই মানুষ হাজির হয় বার্লিন শহরে। বন্ধ পার্কের প্রাণখোলা প্রকৃতি উপভোগ করেন পর্যটকরা।
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়াতে গেলে সিডনির হোমবুশ উপসাগরের ভাসমান অরণ্য (ফ্লোটিং ফরেস্ট) না দেখলেই নয়। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি পুরনো জাহাজ এসএস এয়ারফিল্ডের ধ্বংসাবশেষ। ১৯১১ সালে নির্মিত জাহাজটি কয়লা ও তেল পরিবহণে কাজে লাগত। হোমবুশ সাগরে পরিত্যক্ত অবস্থায় এটি ধীরে ধীরে অসংখ্য গাছপালার আবাসস্থল হয়ে ওঠে। সিডনির ফ্লোটিং ফরেস্ট আজ অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল।
'ভ্যালোন দেই মুলিনি' হল ইটালির সোরেন্তো শহরের কেন্দ্রস্থলের অবস্থিত একটি গভীর গিরিখাত। 'ভ্যালোন দেই মুলিনি'কে ইংরাজি করলে দাঁড়ায় ভ্যালি অব দ্য মিল। অর্থাৎ কিনা যে পাহাড়ে রয়েছে কলকারখানা। মিলগুলি গড়ে উঠেছিল আঠারো শতকে। নানা কারণে বিংশ শতাব্দীতে ধীরে ধীরে সেগুলি বন্ধ হয়ে যায়। পরিত্যক্ত সেই প্রাচীন শিল্পনগরী এখন প্রকৃতির দখলে। 'কারখানার উপত্যকা' ইটালির অন্যতম জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান।
কম্বোডিয়ার একটি লুকানো মন্দির গ্রাম হল বেং মেলিয়া। ৯০০ বছর আগে নির্মিত মন্দিরগুলি। ১৪ হেক্টর প্রাঙ্গণে নির্মিত স্থাপত্যগুলি। ২০২০ সালে কম্বোডিয়ান সরকার বেং মেলিয়াকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে আবেদন করে। দীর্ঘকাল মানুষের নজরের বাইরে থাকায় প্রকৃতি অবাধ হয়ে ওঠে কম্বোডিয়ার এই পর্যটনস্থলে। আজ আশেপাশের জঙ্গল মন্দিরগুলিকে গ্রাস করেছে। সেটাই হয়ে উঠেছে বেং মেলিয়ার আকর্ষণ।
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:59 PM Dec 17, 2025Updated: 08:59 PM Dec 17, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
