সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধীরা যেটাকে সরকারের ব্যর্থতা বলে অভিযোগ করছে, উত্তরপ্রদেশের ভোটপ্রচারে গিয়ে সেটাকেই সাফল্য বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের রবার্টসগঞ্জে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine) থেকে হাজার হাজার মানুষকে ভারত সরকার যেভাবে উদ্ধার করে আনছে সেটাই প্রমাণ করে যে বিশ্বমঞ্চে ভারতের শক্তি বাড়ছে।
এদিনের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ বিশ্বমঞ্চে ভারতের শক্তি বাড়ছে বলেই ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের আমরা সফলভাবে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারছি। এই কাজটির জন্যই আমরা অপারেশন গঙ্গা চালাচ্ছি।” মোদি এদিন দাবি করেছেন, আমরা ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের ফেরাতে সবরকম পদক্ষেপ করছি। ইতিমধ্যেই চারজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আমরা পাঠিয়েছি ভারতীয়দের উদ্ধার করতে। প্রত্যেক ভারতীয় যাতে নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে চেষ্টার কোনও কসুর করবে না কেন্দ্র।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটক ভারতীয়দের ফেরাতে মরিয়া কেন্দ্র, ৩ দিনে ২৬টি বিশেষ উড়ানের ঘোষণা]
বস্তুত, ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করা নিয়ে সরকার রীতিমতো সদর্পে প্রচার করছে। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে এই ‘অপারেশন গঙ্গা’র সুবিধা পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কিন্তু ঘটনা হল, এই অপারেশন নিয়ে যে বিপুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে, সে তুলনায় এর সাফল্য অনেকটাই কম। যুদ্ধ শুরুর প্রায় সাতদিন পরও ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন বহু ভারতীয়। সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার (Russia-Ukraine War) পরে সেখানে আটকে পড়েন প্রায় ২০ হাজার ভারতীয়। সেই সময় থেকেই তাঁদের দেশে ফেরানোর চেষ্টা শুরু করেছে মোদি সরকার। এদের মধ্যে মাত্র ২ হাজার জন দেশে ফিরতে পেরেছেন। ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার জন এখনও বিমানের অপেক্ষায় রয়েছেন।” এখনও ইউক্রেনেই আটকে রয়েছেন কয়েক হাজার ভারতীয়।
[আরও পড়ুন: খাবারের দোকানের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কর্ণাটকের নবীন, রুশ গোলায় এক নিমেষে সব শেষ]
এনিয়ে বিরোধীরাও আক্রমণ শুরু করেছে সরকারকে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ইতিমধ্যেই বলছেন, “উত্তরপ্রদেশের ভোটের জন্য সরকার যেভাবে ভুয়ো প্রচার করছে, সেটা চরম দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রী এটা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের ভোটপ্রচারে গিয়ে বলছেন, সেটা ভাল কথা। কিন্তু সরকারের এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত।” তৃণমূলের সহ-সভাপতি বলছেন, ”সরকার আগেই জানত এই পরিস্থিতি হবে। তাহলে এত ঢিলেমি কেন? ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ থাকলেও ভারতীয় দূতাবাসের উচিত ছিল আগেভাগে সব ভারতবাসীকে সীমান্তে পাঠানো। এতদিন বাদে সরকার চারজন মন্ত্রীকে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলিতে পাঠিয়েছে, এটা তো আরও আগে করা উচিত ছিল। আজ ভারত সরকারের মানসিকতার জন্য, ইউক্রেনের সেনাদের হাতে হেনস্তা হতে হচ্ছে ভারতীয় পড়ুয়াদের।”