চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: অভিনব ‘বক্স-ক্রাব টেকনোলজি’তে (Box Crab Technology) কাঁকড়া চাষের প্রসার বাড়ছে রাজ্যে। হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, নয়াচরে হলদি নদীর তীরবর্তী এলাকায় কাঁকাড়ার চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। এই সব এলাকার প্রসেনজিৎ জানা, সুকুমার আড়ি, শম্ভু মাইতি-সহ বহু যুবক আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করে কাঁকড়া চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন কৃষকরা।
হলদিয়ার (Haldia) মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমনকুমার সাহু জানান, “কাঁকড়া চাষের আধুনিক লাভজনক এই পদ্ধতির নাম “বক্স ক্রাব টেকনোলজি” বা বাক্স-পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অবলম্বনে চাষ করছেন এলাকার কাঁকড়া চাষিরা। পুকুরে মাছ চাষের সঙ্গেই বাক্সে কাঁকড়া চাষ করছেন চাষিরা। নোনা জলের পুকুরে মাছের সঙ্গে সঙ্গে বাক্সে কাঁকড়া চাষ করা যায়। ১০-১২ দিনে পুরুষ কাঁকড়ার চাষ করা যায় আর স্ত্রী কাকঁড়ার ক্ষেত্রে লাগে ২৫-৩০ দিন। তবে অত্যন্ত লাভজনক এই পদ্ধতি।
[আরও পড়ুন:কম খরচে বেশি লাভের সুযোগ, গোবিন্দভোগ চাষেই মজেছেন কালনার কৃষকরা ]
কাঁকড়া চাষি শম্ভু মাইতি জানান, গত তিন বছর ধরে কাঁকড়ার ব্যবসা করছেন। তাঁর কথায়, “কাঁকড়া চাষে লাভ অতুলনীয়। কাঁকড়া কিনে প্লাস্টিকের ছোট ছোট বাক্সে ভরে পুকুরে রেখে দেওয়া হয়। প্লাস্টিকের বাক্সগুলো হায়দরাবাদ থেকে কিনে আনা হয়। এক একটা বাক্সের দাম ১০০ টাকা। প্রতিটা বাক্সে এক একটি কাঁকড়া থাকে। কাঁকড়াকে প্রতিদিন শুটকি মাছ খাবার হিসেবে দেওয়া হয়।”
কাঁকড়া চাষের ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সুবিধা হল, এতে পরিশ্রম কম করতে হয়, উৎপাদন খরচও অনেক কম। আর কাঁকড়া দ্রুত বাজারজাত করা যায়। হলদি নদীর তীরে রয়েছে কাঁকড়ার আড়ত। সেই আড়তের একজন আড়িতদার অমিত বেরা জানান, “বাঘাযতীনে রয়েছে কাঁকড়ার বড় মার্কেট। যেখান থেকে কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানি হয়। এই কাঁকড়া থাইল্যান্ড, জাপান এবং চিনে যায়। নভেম্বর থেকে তিন মাস কাঁকড়ার ব্যাপক চাহিদা থাকে। এ অঞ্চলের মানুষ যারা এক সময় বাগদা চিংড়ি চাষের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁরাও এখন কাঁকড়ার ব্যবসায় ঝুঁকেছেন।”