সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: লকডাউনে সকলেই গৃহবন্দি। ফলে বন্ধ যানবাহনও। বাজার খোলা থাকলেও সেখানে সবজি নিয়ে আসতে পারছেন না কৃষকরা। তাছাড়া আগের মতো বিক্রিবাটাও নেই। ফলে দাম শুধু কমে যাওয়াই নয়। মাঠেও পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন ফসল লাউ, ঢেঁড়শ, বেগুন, শসা এমনকি লঙ্কাও। তাই পুরুলিয়া জেলা পুলিশ কৃষককে বাঁচাতে তাদের চাষের জমি থেকে সেই ফসল কিনে ত্রাণের ব্যবস্থা করছে। পুলিশের চাল, ডালের ত্রাণের প্যাকেটে থাকছে ওই সবজিও। পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এই পদক্ষেপে উপকার পাচ্ছেন দুই স্তরের মানুষজনই। পুরুলিয়া জেলা পুলিশের নির্দেশে জয়পুর-সহ বিভিন্ন থানা এলাকাতেই চলছে এই কাজ।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, “জয়পুর থানা দিয়ে এই কাজ আমরা শুরু করেছি। এই কাজে আমাদের লক্ষ্য কৃষকরাও যাতে এই অবস্থায় তাদের ফসল বিক্রি করে হাতে অর্থ পান। সেইসঙ্গে এই ফসলই ত্রাণের প্যাকেটে উপার্জনহীন মানুষজনের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যাতে তাদের খাবারের কোন সমস্যা না হয়।” এক মাসের বেশি লকডাউনের জেরে জঙ্গলমহলের এই জেলায় কৃষকরা ভীষনভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। প্রান্তিক কৃষকরা মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে চাষ করেন। কিন্তু এখন সেই উৎপাদিত ফসলের সেভাবে দাম পাচ্ছেন না। ফলে লাভ তো দূরের কথা মহাজনের ঋণ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এই অবস্থায় জয়পুর থানা জয়পুর ব্লক প্রশাসনের সহায়তায় কৃষকদের কাছ থেকে মাঠে পড়ে থাকা সবজি কিনে নিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ রপ্তানি, জারবেরা কেটে রাস্তায় ফেললেন বর্ধমানের ফুলচাষি]
জয়পুর থানাকে দেখে জেলার অন্যান্য থানা গুলিও একই পথে হেঁটে ত্রাণের প্যাকেটে থাকছে লাউ, বেগুন, ঢেঁড়শ, লঙ্কাও। এসব সবজিরই দাম এখন প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। ফলে সেই অর্থটুকুও যদি প্রান্তিক কৃষক না পান তাহলে চরম সমস্যায় পড়তে হবে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ তা উপলব্ধি করেই কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের এই ত্রাণে কাঁচা সবজির সঙ্গে থাকছে চাল, আলু, মসুর ডাল, সরষের তেল, নুন, হলুদ, পিঁয়াজ ও সোয়াবিন।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বোরো ধান কাটায় সমস্যা, কৃষি কার্যালয় খোলা রাখার নির্দেশ জেলাশাসকের]
The post কৃষকদের থেকে সরাসরি সবজি কিনছে পুলিশ, লকডাউনে উপকৃত পুরুলিয়ার বহু কৃষক appeared first on Sangbad Pratidin.