সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ইডির দপ্তরে হাজিরা দিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। সোমবার সকাল সওয়া এগারোটা নাগাদ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসে পৌঁছন তিনি। তার আগেই রাহুলের বাড়িতে যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দাদার পাশে দাঁড়াতে ইডি দপ্তর পর্যন্ত গিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। হাজিরার আগে দলের সদর দপ্তরে যান রাহুল। সেখান থেকেই ইডির অফিসে পৌঁছন।
কংগ্রেস সাংসদকে তলব করার পরেই দলের তরফে জানানো হয়েছিল, দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখানো হবে। সেই মতোই সোমবার সকাল থেকেই দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দপ্তরের সামনে ভিড় জমাতে থাকেন সমর্থকেরা।
[আরও পড়ুন:দেশে করোনা সংক্রমণ সামান্য কমলেও স্বস্তি নেই, পরপর তিনদিন আক্রান্ত ৮ হাজারের বেশি]
ইডি দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেন কংগ্রেস কর্মীরা। জনপ্রিয় সিনেমা ‘পুষ্পা দ্য রাইজ’এর সংলাপ অনুকরণে ‘ঝুঁকেগা নেহি’ পোস্টার নিয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, মোদি সরকার ভয় পেয়েছে। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ‘সত্যের সংগ্রাম’ চলবে। ব্রিটিশ সরকারও কংগ্রেসের লড়াইকে থামাতে পারেনি,সেখানে মোদি সরকার কী করবে?” বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে কংগ্রেসের সদর দপ্তর ও ইডি অফিসের সামনে।
সোমবার সকাল থেকেই একে একে কংগ্রেস নেতারা হাজির হতে থাকেন দলের সদর দপ্তরে। অধীর চৌধুরী, কার্তি চিদম্বরম, রণদীপ সুরজেওয়ালা-সহ আরও নেতারা এসেছেন। ইডির তলবের বিরুদ্ধে দলের একতা বজায় রাখার নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতেই তাঁরা এসেছেন বলে জানিয়েছেন নেতারা। দিল্লিতে আটক করা হয়েছে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বাঘেলকে। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকেও আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। ইডি দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কে বেণুগোপাল, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত-সহ অন্যান্য কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের টেনে হিঁচড়ে বাসে তোলে পুলিশ। বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতার পোশাক ছিঁড়ে যায়। আটক করা নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে থানায় গিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
জেরা চলাকালীন রাহুলকে দুপুরের খাবার খাওয়ার অনুমতি দেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু খাবার খেতে চাননি রাহুল।
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর মালিকানাধীন ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থা ২০১১ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ড, কোয়াম-ই-আওয়াজ, এবং নবজীবন, এই তিনটি সংবাদপত্র ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডে’র কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। অভিযোগ ছিল, ওই অধিগ্রহণ নিয়ম মেনে হয়নি। ঘুরপথে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের’ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসের ফার্স্ট ফ্যামিলি পরিচালিত ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’। ২০১২ সালে প্রথম অভিযোগ প্রকাশ্যে এলেও ইডি তদন্ত শুরু করে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালে। ২০১৫ সালে এই মামলায় গান্ধীরা আগাম জামিন পেয়ে যান। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে তলব করে ইডি। তাঁর বক্তব্যের পরেই ডেকে পাঠানো হয় সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে।
[আরও পড়ুন: মেলেনি ফোন, মায়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে না পেরে হস্টেলেই আত্মঘাতী স্কুলপড়ুয়া]