সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেটে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল এক কিশোরী। সে ভাবতেও পারেনি পরীক্ষায় কী ফল পাওয়া যাবে। চিকিৎসকরা দেখতে পান নাবালিকার গর্ভে রয়েছে ৯ মাসের সন্তানের ভ্রূণ! পরে সে একটি সুস্থ সন্তানের জন্মও দেয়। কিন্তু কেমন করে ঘটল এমন 'অঘটন'? ঘটনাটি কিন্তু আজকের নয়। ১৯৮৮ সালের। সম্প্রতি এক বিজ্ঞান সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে তা নতুন করে চর্চায় উঠে এসেছে।
জানা গিয়েছে, এমার্জেন্সি রুমে চিকিৎসকরা পঞ্চদশী রোগিনীর ভালভা পরীক্ষা করে দেখতে পান তার জননছিদ্রটি প্রায় অনুপস্থিত, সেটি মাত্র ০.৮ ইঞ্চি অথবা ২ সেন্টিমিটার গভীর (সাধারণত যা ৫ থেকে ১০ সেন্টিমিটার হয়, সর্বোচ্চ ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়)! এই বিশেষ অবস্থাকে বলা হয় ডিস্টাল ভ্যাজিনাল আটরেসিয়া। ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার মেয়ের মধ্যে একজনের এমন হতে পারে। এরপর সিজারিয়ান সেকশন তথা সি-সেকশন করেন চিকিৎসকরা। সন্তানের জন্ম দেয় ওই কিশোরী। শিশুটির ওজন ছিল ২.৮ কেজি।
কিন্তু পরিণত জননছিদ্র ছাড়া কী করে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল ওই কিশোরী? গর্ভধারণের ক্ষেত্রে পুরুষের বীর্য স্ত্রী জননাঙ্গের ভিতরে প্রবেশ করে যোনিপথেই। কিন্তু এক্ষেত্রে তা প্রবেশ করেছিল মুখগহ্বর দিয়ে। কীভাবে এটা সম্ভব হতে পারে? চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন ৯ মাস আগে ওই হাসপাতালেই এসেছিল কিশোরীটি। সে জখম অবস্থায় ছিল। আসলে তার প্রাক্তন প্রেমিক তাকে নতুন প্রেমিকের সঙ্গে মুখমৈথুনরত অবস্থায় দেখে ফেলেছিল। তাতেই রেগে গিয়ে সে ছুরি দিয়ে আঘাত করে কিশোরীকে। ডাক্তারদের অনুমান, ছুরিকাঘাতের ফলে হওয়া ক্ষতগুলির মাধ্যমেই গিলে ফেলা শুক্রাণু তার পরিপাকতন্ত্র থেকে বেরিয়ে প্রজননতন্ত্রে প্রবেশ করে। যার ফলে এক অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ ঘটে যায়।
এমনটা সচরাচর ঘটে না কেন, তাও ব্যাখ্যা করেছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, অপুষ্টিতে ভোগা শরীরের পরিপাকতন্ত্রে অম্লের পরিমাণ কমে যায়। বরং সেখানে ক্ষারের পরিমাণ বাড়ে। যেহেতু আঘাতের সময় কিশোরীর পাকস্থলী প্রায় খালি ছিল, তাই তা বীর্যের পথ প্রজননতন্ত্রে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল। নিশ্চিত ভাবেই এমন ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম বললেও কম বলা হয়। সেই কারণেই প্রায় তিন দশক আগের এই ঘটনা বারবার আলোচনায় ফিরে ফিরে আসে।
