সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখে চোখে কথা বিনিময়, প্রেম হয়ে গেল। তারপর কিছুদিন এখানে সেখানে ঘোরাঘুরির পর যুগলের যে কোনও একজনের বা দুজনেরই বাড়ি থেকে তীব্র আপত্তি, বাধা ওঠায় শেষমেশ পালিয়ে গিয়ে বিয়ে! 'ভাইবস অব ইন্ডিয়া' নামে এক ওয়েবসাইটের খবর, প্রাপ্তবয়স্ক যুগলের এমন প্রেম-পরিণয় ঠেকাতে অর্ডিন্যান্স এনে আইন বদলাতে চলেছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। রাজ্যে 'লাভ জিহাদ' তকমা দিয়ে ভিনধর্মী বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে আগেই। এবার অভিভাবকদের সম্মতি বিনা প্রাপ্তবয়স্কদের বিয়েও বন্ধ করার উদ্যোগ গেরুয়া দল শাসিত রাজ্যে। অর্থাৎ বয়সের মাপকাঠিতে ছেলে-মেয়েরা স্বাধীন হলেও নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে রাশ থাকবে বাবা-মায়ের হাতেই!
এ ব্যাপারে গুজরাতের নানা মহল, সংগঠন থেকেই দাবি উঠছিল কিছুদিন ধরে। তাকে স্বীকৃতি দিয়েই গুজরাত মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পেশ হয়েছে বলে খবর। তা অনুমোদন পাওয়া সময়ের অপেক্ষা বলেই সূত্রের খবর। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রেমিক যুগল বিয়ে করলেও দুজনের বাবা-মা বা অভিভাবকদের সায় না পাওয়া গেলে তা নথিভুক্ত হবে না। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে প্রেমের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করাতে গেলে অভিভাবকদের গ্রিন সিগন্যাল বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। যাতে প্রেমের বিয়েতে অভিভাবকদের ভূমিকা, সম্মতি প্রদান প্রক্রিয়া মসৃণ হয়, সেজন্য একাধিক পদক্ষেপের সুপারিশ রয়েছে সরকারি প্রস্তাবে। যেমন পালিয়ে বিয়ের নথিভুক্তিকরণের আগে পাত্র-পাত্রীর বাবা-মাকে বাধ্যতামূলক নোটিস পাঠানো হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে নোটিস প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে। এবং সেই বিয়ের রেজিস্ট্রি হবে শুধুমাত্র পাত্রীর আধার কার্ডে উল্লেখ করা ঠিকানার কাছাকাছি কোনও অফিসে।
এমন ভাবনা আইনে পরিণত হলে দেশে গুজরাতই হবে এ ব্যাপারে পথ দেখানো প্রথম রাজ্য। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছে। কিন্তু দেখার মতো ব্যাপার হল, শাসক বিজেপি বা বিরোধী কংগ্রেস--উভয় পক্ষই প্রেমের বিয়েতে বাপ-মায়ের সম্মতি বাধ্যতামূলক করায় সহমত। সূত্রের খবর, পালিয়ে বিয়ে, বিয়ের নামে প্রতারণার ঘটনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় ২০২৩ থেকেই বিজেপি এমন অর্ডিন্যান্সের ভাবনাচিন্তা করছিল। বিজেপির কয়েকজন বিধায়ক, কংগ্রেসের এমপি একসুরে বলেছেন, ছেলেমেয়েরা তাঁদের না জানিয়ে বিয়ে করলে অভিভাবকরা যাতে অসহায় না হয়ে পড়েন, সেটা সুনিশ্চিত করতে একটা আইনি ফ্রেমওয়ার্ক দরকার। তাঁদের এ ব্যাপারে ভূমিকা থাকলে আইনি, সামাজিক, মানসিক জটিলতা এড়ানো যেতে পারে। আবার প্রভাবশালী পতিদার গোষ্ঠীর নেতাদের অভিমত, অল্পবয়সি মেয়েরা প্রেমে আবেগতাড়িত হয়ে অনেক সময় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে পরে পস্তায়, অনুশোচনায় ভোগে। ফলে দুটো পরিবারই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পতিদার নেতারা সম্প্রতি তাঁদের দাবি জানাতে মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন।
