সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জগন্নাথ দেবের জন্মতিথি! সেই দিনই স্নানযাত্রা। জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই আয়োজন। তবে কেন হয় স্নানযাত্রা? পুরাণ অনুযায়ী জানা যায়, ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং প্রভু জগন্নাথ। মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নকে বলেছিলেন, আবির্ভাব তিথিতে যেন তাঁকে বাইরে মণ্ডপে এনে স্নান করানো হয়। জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার এটিই গোড়ার কথা। তবে এর নেপথ্যে আছে আরও এক পৌরাণিক কাহিনি। কলিতে যিনি জগন্নাথ, বিশ্বাস মতে দ্বাপরে তিনিই তো ছিলেন কৃষ্ণ। গোপীদের স্নান আর বস্ত্রহরণের কাহিনি তো সুবিদিত। সেদিন রাধারানি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, এমন দিন আসবে যখন জগতের সামনেই হবে জগতের প্রভুর স্নান। সেই পুণ্যস্নানের মহালগ্নই কলিতে প্রভু জগন্নাথের স্নানযাত্রা।
স্নানযাত্রায় কী কী রীতি মানা হয়?
স্নানযাত্রার আগের দিন পুরীতে বলরাম, সুভদ্রা, জগন্নাথের মূর্তি-সহ সুদর্শন চক্র ও মদনমোহন বিগ্রহকে গর্ভগৃহ থেকে বার করে এনে স্নানবেদীতে রাখা হয়। সে এক বিশাল শোভাযাত্রা! ভক্তেরা এই সময় জগন্নাথদেবকে বাইরেই দর্শন করতে পারেন। স্নানযাত্রার দিন মন্দিরের উত্তর দিকের কুয়ো থেকে জল এনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে শুদ্ধিকরণ করা হয়। তার পর ১০৮ টি কলসে সেই জল নিয়ে বিগ্রহগুলিকে স্নান করানো হয়। সেদিন সন্ধ্যায় স্নানপর্বের সমাপ্তির পর জগন্নাথ ও বলরামকে গণেশের রূপে সাজানো হয়। এই রূপটিকে বলা হয় ‘গজবেশ’।
স্নানযাত্রা থেকে রথযাত্রার সময়কাল?
কথিত আছে, স্নানযাত্রার পর জ্বরে পড়েন তিন ভাই-বোন। ১৪ দিন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রাকে আলাদা একটি ঘরে রাখা হয়। ঈশ্বরের এই অসুস্থতার সময়কে বলা হয় ‘অনসর’। এই সময়কালে ভক্তরা দেবতার দর্শন পান না। সেই সময় মন্দিরে বিগ্রহের বদলে একটি পটচিত্র রাখা হয়। জ্বর থেকে সেড়ে উঠে মাসির বাড়ি ঘুরতে যায় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা।
কবে স্নানযাত্রা?
চলতি বছর স্নানযাত্রা পালন করা হবে ১১ জুন। দেবস্নান পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে অবশ্য আজ মঙ্গলবার থেকেই। জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা তিথি পড়েছে ১০ এবং ১১ জুন। পঞ্জিকা অনুসারে, পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে মঙ্গলবার ১০ জুন সকাল ১১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ। পূর্ণিমা থাকবে বুধবার ১১ জুন দুপুর ১টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত। স্নানযাত্রার অনুষ্ঠান হবে ১১তারিখে।