shono
Advertisement

কালীপুজোয় নিঁখুত উচ্চারণে মন্ত্র না পড়লে বিপদ অবধারিত, সতর্কবার্তা পুরোহিতদের

আগামী তিনদিন কালীপুজোর প্রশিক্ষণ দেবেন শাস্ত্রজ্ঞরা।
Posted: 03:29 PM Oct 23, 2021Updated: 03:29 PM Oct 23, 2021

অভিরূপ দাস: ছাত্ররা সব মধ্যবয়স্ক। টিকিধারী। মাস্টারমশাইয়ের গলায় উপবীত। পড়াশোনার বিষয় অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান নয়। বিষয়টা – কালীপুজো (Kali Puja)। আঙুল দিয়ে হরিণ বানিয়ে হোমের আগুনে ফেলতে হবে বেলপাতা। না হলেই সর্বনাশ। কালীসাধনার নিয়ম এমনই। শুক্রবার এসবই হাতেকলমে শিখলেন পুরোহিতরা। কালীপুজোর কোচিংয়ের প্রশিক্ষণ (Training) হল দাঁ বাড়িতে। ২২,২৩,২৪ অক্টোবর চলবে এই অভিনব প্রশিক্ষণ। শিক্ষক ডা. জয়ন্ত কুশারি সর্বভারতীয় প্রাচ্যবিদ্যা আকাদেমির অধ্যক্ষ।

Advertisement

কেন এমন অদ্ভুত কোচিং? শাস্ত্রজ্ঞ জয়ন্ত কুশারি বলছেন, “কালীপুজো মানে শক্তি আরাধনা। তা বড় সহজ নয়। ভুল হলেই অন্যর্থ। বাড়তে পারে করোনা সংক্রমণও।” শাস্ত্রজ্ঞদের আরও বক্তব্য, দুর্গাপুজো (Durga Puja)করা অপেক্ষাকৃত সহজ। দশভুজা পুরাণের দেবী। মার্কণ্ডেয় পুরাণ, বৃহৎ নন্দীকেশ্বর পুরাণ, কালিকাপুরাণে দুর্গার উল্লেখ আছে। কিন্তু কালী হচ্ছেন তন্ত্রের দেবী। পুজোয় সামান্য ভুল হলেই বড়সড় গন্ডগোল।

[আরও পড়ুন: ত্রয়োদশীতে ৫১ জন কুমারীর পুজো সতীপীঠ কঙ্কালীতলায়, জানেন এর মাহাত্ম্য?]

সাধারণের দৃষ্টিতে দুর্গা, কালী একই দেবীর নানা রূপ। কিন্তু পুজোপদ্ধতির মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। ভাবের ঘোরে মা কালীকে পুজো করতেন শ্রীরামকৃষ্ণ। নিজের হাতে ভোগ খাইয়ে দিতেন। সেই পুজোকে নস্যাৎ করছেন না শাস্ত্রজ্ঞরা। তবে পাড়ায়, বাড়িতে যে পুজো হয়, তা মূলত শাস্ত্র মেনে। ভাবের ঘোরে নয়। জয়ন্ত কুশারির কথায়, নাস্তিক হলে ক্ষতি নেই। কিন্তু শাস্ত্র মেনে পুজো করতে হলে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।

শ্যামাপুজোর রাতে প্যান্ডেলে বা বাড়িতে যে প্রতিমা দেখা যায়, তা দক্ষিণাকালী। তা মূলত দু’রকম। তার গায়ের বর্ণ নীলচে হলে ‘শ্যামা কালী’ বলা হয়। আর যখন কালীর গায়ের রং বর্ষার কালো মেঘের মতো, তখন তিনি দক্ষিণা কালী। কী কী নিয়ম মানতে হবে? শাস্ত্রজ্ঞরা বলছেন, কালীপুজো বিজ্ঞান বই অন্য কিছু নয়। তন্ত্রসাধনার মূল অংশ হল ষোঢ়ান্যাস। এই ষোঢ়ান্যাস আবার দু’টি। বৃহৎ ষোঢ়ান্যাস এবং সংক্ষিপ্ত ষোঢ়ান্যাস। কী ষোঢ়ান্যাস? জয়ন্ত কুশারি জানিয়েছেন, পুরোহিতকে বিশেষ বিশেষ মন্ত্র বলার সময় নিজের শরীরের বিশেষ অঙ্গকে ছুঁতে হবে। সেগুলোই শেখানো হয়েছে কালীপুজোর কোচিংয়ে।

[আরও পড়ুন: আগামী বছর কোন তারিখে শুরু পুজো? জেনে নিন নির্ঘণ্ট]

পাশের বাড়ির ব্রাহ্মণকে নিয়ে যেনতেন প্রকারে পুজো সারেন অনেকেই। শাস্ত্রজ্ঞরা বলছেন, স্রেফ উপবীত থাকলেই সংস্কৃত বোঝা যায় না। ফলে মন্ত্রের সিংহভাগ অর্থ না বুঝে পুজো করেন কিছু ব্রাহ্মণ। জয়ন্ত কুশারির কথায়, ”কালীর সাধনায় বলা হয়েছে, গুল্প ছুঁতে হবে। এ শব্দের মানে জানেন না অনেকেই। তন্ত্রসাধনায় গুল্প কথার অর্থ গোড়ালি। ছুঁতে হয় কুর্পর বা কনুই। এগুলোই শেখানো হয়েছে কালীপুজো কোচিংয়ে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement