অভিরূপ দাস: দেশের সেরা পতঙ্গবিদের পালক এবার বাংলার মুকুটে। 'থেক্কাথু নারায়ণন অনন্ত কৃষ্ণন' সম্মানে ভূষিত হলেন বঙ্গসন্তান নবনীত সিং। জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সদর দপ্তরের বিজ্ঞানী পতঙ্গবিদ নবনীত। দেশের আধুনিক কীটতত্ত্ব গবেষণার স্থপতি অধ্যাপক টি এন অনন্তকৃষ্ণন। ২০১৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই থেকে প্রতি দু'বছরে একবার এই পুরস্কার দেওয়া হয় দেশের মধ্যে সেরার সেরা পতঙ্গবিদকে। এবছর সেই পুরস্কারপ্রাপক বাংলার নবনীত সিং।
সূত্রের খবর, প্রত্যাশীদের তালিকা ছিল দীর্ঘ। দেশের তাবড় পতঙ্গবিদদের কৃতিত্ব যাচাই করে দেখা হয় পুরস্কার বিতরণীর আগে। শেষমেশ বেঙ্গালুরুতে 'স্বাস্থ্য কৃষি ও পরিবেশে পোকামাকড়ের ভূমিকা' শীর্ষক সম্মেলনে ড. নবনীত সিংয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। নবনীত জানিয়েছেন, "বিগত দশ বছরে ১৯০টি প্রজাতির প্রজাপতি এবং মথ আবিষ্কার করেছি। এই সম্মান পেয়ে তৃপ্তি অনুভব করছি।” পতঙ্গবিদ নবনীত সিংয়ের আবিষ্কারের তালিকায় রয়েছে প্রজাপতির ২০টি নতুন গণ। বাংলায় জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গবেষকের সাফল্যে আপ্লুত জেডএসআইয়ের ডিরেক্টর ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, "নবনীত সিংয়ের গবেষণা ভারতের জীববৈচিত্র সংরক্ষণে এক আলাদা মাত্রা রেখেছে।"
নতুন প্রজাতির প্রজাপতি আবিষ্কারের পাশাপাশি নবনীত সিং গবেষণা করেছেন পরাগ সংযোগ নিয়েও। রাতের অন্ধকারে পরাগসংযোগে মথের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উঠে এসেছে তাঁর অনুসন্ধানে। গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন, উদ্ভিদের প্রজননে ৯১টি প্রজাতির সেটলিং মথ, ১৬ প্রজাতির হক মথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ৩৭টি নির্দিষ্ট প্রজাতির মথ ১১টি অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদের পরাগরেণু বহনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে তা নিজের অধ্যয়নে দেখিয়েছেন নবনীত সিং। শুধু নতুন প্রজাতি আবিষ্কার নয়। তিনি দেশের লেপিডোপ্টেরা সংক্রান্ত ১৩ হাজার ১২৪টি প্রজাতির একটি অনলাইন চেকলিস্টও প্রস্তুত করেছেন। যা পাওয়া যাবে জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সরকারি ওয়েবসাইটে।
