সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'উত্তপ্ত' সৌদি আরবে তুষারপাত! সঙ্গে চলছে বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া। তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ৪ ডিগ্রিতে। গত ৩০ বছরে এখানে তুষারপাত হয়নি। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎই এমন দৃশ্য থেকে থ পরিবেশবিদরা। এবং বিষয়টিকে একেবারেই লঘু করে দেখতে নারাজ তাঁরা। মনে করা হচ্ছে, বাকি বিশ্ব-সহ ভারতের জন্যও বিষয়টি উদ্বেগের।
প্রকৃতির খামখেয়ালেই আরবের এই দশা। আর সেটাই ভাবাচ্ছে পরিবেশবিদদের। সাধারণ ভাবে একটা ধারণা রয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থই হল সর্বত্রই ক্রমশ বাড়তে থাকা উষ্ণতা। কিন্তু বিজ্ঞানীদের বক্তব্য হল, বিপরীতটাই আসলে সত্যি। যতই এই গ্রহটা গরম হয়ে উঠছে, ততই আবহাওয়ায় যুক্ত হচ্ছে আরও বেশি আর্দ্রতা ও শক্তি। এর ফলে এতদিনে ধরে যে আবহাওয়ার সঙ্গে আমরা পরিচিত সেটাই অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। আর তারই ফলশ্রুতি ভারত-সহ সারা বিশ্ব তীব্র তাপপ্রবাহ, অতিবৃষ্টি এবং অপ্রত্যাশিত স্থানে আকস্মিক শৈত্যপ্রবাহের মতো ঘটনা ঘটতে প্রত্যক্ষ করছে।
ভারতের প্রসঙ্গে বলাই যায়, ২০২৫ সালেই প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা এদেশ নিজেই প্রত্যক্ষ করেছে। মধ্য ও উত্তর ভারতে রেকর্ড ভাঙা তাপপ্রবাহ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ ও সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির কথা এপ্রসঙ্গে বলাই যায়। অন্যদিকে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে বৃষ্টি দেরিতে এসেছে। অনিয়মিতও থেকেছে। এটা কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। বলা যায়, প্রকৃতির পরিস্থিতি ঠিক কেমন সেটাই স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিচ্ছে এই ঘটনা।
ভারতে অবশ্য সৌদির মতো অপ্রত্যাশিত তুষারপাত ঘটেনি। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হয়েছে। এদেশের কৃষিচক্র, জল ব্যবস্থাপনা, নগর পরিকল্পনা এবং বিদ্যুতের চাহিদাপূরণ— সব কিছুই ঋতুভিত্তিক স্বাভাবিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। যখন এই স্বাভাবিক অবস্থা ভেঙে পড়ে, তখনই ফসলহানি থেকে শুরু করে শহরে বন্যা এবং তাপজনিত মৃত্যু পর্যন্ত নানা ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বহুগুণে বেড়ে যায়। ফলে সৌদির তুষারপাত এদেশেও 'পাগলাঘণ্টি' বাজাতে শুরু করে দিয়েছে। বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা সতর্ক করছেন। আমরা শুনছি কি?
